জয়পুরহাটের কালাই পৌর শহরের মোবাইলে দুই ভাইয়ের গেইম খেলার অপরাধে মা শাহিনুর আক্তারকে (৩০) মারপিট করে হত্যা করেছে বাবা আজিবর রহমান। গত মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় পৌর শহরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও
প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,
শাহিনুর-আজিবর
দম্পতির বাড়ি বুরুঙ্গি গ্রামে। এটি গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলায় অবস্থিত। তাদের
সংসারে দুই ছেলে আশিকুর রহমান আপন (১২) ও পরান (৮) এবং মেয়ে খুশি (২)।
মঙ্গলবার (১৩জুলাই) বিকেলে শাহিনুর-আজিবর দম্পতির দুই ছেলে আপন ও পরান চাতালে ছোট বোন খুশিকে নিয়ে বাবা আজিব রহমানের মোবাইল সেটে গেইম খেলছিল। এই ফাঁকে স্বামী-স্ত্রী মিলে ধান শুকানোর কাজ করছিল। বড়ছেলে আপন ৪০ মিনিট খেলার পর ছোট ছেলে পরানকে মোবাইল দেয়। তখন বোন খুশিকে নিয়েছিল আপন। হঠাৎ করে খুশি কান্না করতে থাকলে মা শাহিনুর কাজের ফাঁকে এসে মোবাইল সেট কেড়ে নেয় এবং দুই ছেলেকে শাসন করে।
এমন অবস্থা দেখে বাবা আজিবর তার স্ত্রীকে গালে একটি থাপ্পর মারলে স্ত্রী শাহিনুর স্বামীর উপর রাগ করে ওই মোবাইল সেট মেঝেতে আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন। এমন দৃশ্য দেখে স্বামী আজিবর তার স্ত্রী শাহিনুরকে মারপিট করতে থাকে এক পর্যায়ে শাহিনুর মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় স্বামী ও প্রতিবেশীরা মিলে শাহিনুরকে অটো ভ্যান যোগে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখানে
করোনার রোগী ভর্তি থাকায় তাদেরকে চিকিৎসকরা পাশের ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। ওই অবস্থায় অটো ভ্যানে তার স্ত্রীকে রেখে পালিয়ে
যায় স্বামী আজিবর রহমান।
নিহত শাহিনুরের ছোট ছেলে পরান বলেন, মোবাইল ভাঙ্গার জন্য বাবা মার বুকে লাথি মারে। তখন মা মাটিতে পরে যায়। বাবা, চাচী ও প্রতিবেশীরা মাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে শুনি আমার মা মারা গেছে। কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মালিক বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামী পলাতক রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন