যুদ্ধজাহাজের রাডারের কার্যকারিতা

যুদ্ধজাহাজের রাডারের কার্যকারিতা
MostPlay

সার্চিং এর ক্ষেত্রে এয়ার সার্চ এবং সার্ফেস সার্চ এ অনেক পার্থক্য রয়েছে। একটা শক্তিশালী রাডার দিয়ে আকাশে ৪০০/৫০০ কিমি দূরের অবজেক্ট শনাক্ত করা গেলেও ভূমিতে খুব নিচুতে বা সমুদ্রে কোন অবজেক্ট শনাক্ত করা সম্ভব নয়। এর কারণ হচ্ছে earth curvature। সহজে বলতে গেলে পৃথিবী কিন্তু গোলাকার। তাই রাডারের তরঙ্গ যখন সরলরেখা বরাবর যাবে তখন তা কিছু দূর যাওয়ার পরই ভূমিতে স্পর্শ করবে। এর ফলে তা আর সামনে এগুতে পারবেনা। এজন্য যুদ্ধবিমান খুব নিচু দিয়ে উড়ে আসলে রাডারে ধরা পরেনা।

আজকের পোস্ট এর মূল কারণ হচ্ছে যদি RAT-31DL এর মতো ৫০০ কিমি রেঞ্জ এর রাডার সেন্টমার্টিনে বসিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আমাদের পুরো সমুদ্রসীমা নজরদারিতে চলে আসবে। উত্তর হচ্ছে এরকম রাডার দিয়ে আকাশের অনেক উঁচুতে থাকা বস্তু ৫০০ কিমি দূর থেকে শনাক্ত সম্ভব। কিন্তু সমুদ্রে থাকা কোনো যুদ্ধজাহাজ বা যেকোনো জাহাজ এতদূর থেকে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। একটা অবাক করার মতো তথ্য হচ্ছে যুদ্ধজাহাজে শক্তিশালী রাডার থাকলেও তা সমুদ্রে থাকা আরেকটি জাহাজ খুব কাছে থাকলেই দেখতে পারে।

যেমন যুদ্ধজাহাজ এর রাডার যদি ৭৫ ফুট উঁচুতে স্থাপন করা হয় তাহলে একেবারে ছোট আকৃতির কোন স্পীডবোট বা সমুদ্র থেকে ১/২ মিটার উচ্চতায় উড়ে আসা কোন ক্রুজ মিসাইল সর্বোচ্চ ২০ কিমি দূরে থেকে শনাক্ত করা যাবে। আবার যদি দুটি জাহাজের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মোটামুটি ৭০ ফুট হয়। তাহলে একটি জাহাজ আরেকটি জাহাজকে বড়জোর ৬০ কিমি দূরে থেকে শনাক্ত করতে পারবে। তাই যুদ্ধজাহাজের রাডারগুলো যথাসম্ভব উঁচুতে স্থাপন করা হয়।

এখন প্রশ্ন জাগতে পারে জাহাজের রাডার রেঞ্জ ৩০০/৪০০ কিমি মানে কি? ৩০০/৪০০ কিমি মানে এটা এয়ার সার্চ রেঞ্জ। তাহলে কীভাবে এতবড় সমুদ্র নজরদারি করা হয় বা যুদ্ধজাহাজকে লক্ষ্য শত কিমি দূরে থেকে কীভাবে এন্টিশীপ মিসাইল ছোড়া হয়? এর উত্তর হলো বিমান থেকে শত্রু পক্ষের যুদ্ধজাহাজ শনাক্ত করা হয় এবং সেই তথ্য অনুযায়ী ফ্লাইট সিমুলেশনের মাধ্যমে মিসাইল নিক্ষেপ করে যুদ্ধজাহাজ।

আর সেই মিসাইল টার্গেটের খুব কাছে গিয়ে নিজস্ব সেন্সর চালু করে টার্গেট খুঁজে নেয়। যেমন মিসাইলকে বলে দেওয়া হয় দক্ষিণ দিক বরাবর ১১০ কিমি যাও, তারপর তোমার সেন্সর চালু করো। মিসাইল চোখ বন্ধ করে ১১০ কিমি দক্ষিণে গিয়ে সেন্সর চালু করে তারপর টার্গেট খুঁজে আঘাত করে। অবশেষে আরো একটি বিষয় হচ্ছে এন্টিশীপ মিসাইল এর গতির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সী স্কিমিং।

যে মিসাইল যত নিচু দিয়ে উড়তে পারবে ডিটেক্ট হওয়ার চান্স ও তত কম। আর মিসাইল এর গতি যত বেশি হয় সেটা তত উপর দিয়ে উড়ে। তাই সুপারশনিক ক্রুজ মিসাইল এর চেয়ে সাবশনিক মিসাইল বেশি এফেক্টিভ। সমুদ্রে নজরদারির জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দুটি Dornier 228 MPA বিমান আছে। এবং আরো দুটি Dorniar আসবে seaspray-5000E রাডার সহ। যেগুলো দিয়ে সমুদ্রে ৩৭০ কিমি পর্যন্ত নজরদারি সম্ভব।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password