জম্বি ভাইরাস কী মৃ'ত্যুপুরীতে পরিণত করবে পৃথিবীকে?

জম্বি ভাইরাস কী মৃ'ত্যুপুরীতে পরিণত করবে পৃথিবীকে?
MostPlay

জম্বির ভাইরাস যার শরীরে একবার প্রবেশ করে সে মানুষ জম্বিতে পরিণত হয়। পুরনো এক ভাইরাস ফিরে এল বরফের তলা থেকে। বরফের নীচ থেকে জেগে ওঠার আশঙ্কা জম্বি ভাইরাসের। বিশ্বব্যাপী ফের একবার বিপর্যয়কর স্বাস্থ্য জরুরী অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বহু হাজার বছরের পুরনো বরফের স্তর বা পারমাফ্রস্ট গলে যাওয়া মানুষের জন্য নতুন আশঙ্কার সৃষ্টি করতে পারে। এমন কথা বিজ্ঞানীরা বহু দিন ধরেই বলেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, দুই ডজনেরও বেশি এমন ভাইরাস খুঁজে পেয়েছেন, যেগুলি মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। আর এই তালিকায় রয়েছে এমন কয়েকটি ভাইরাস, যাদের নাম দেওয়া হয়েছে জম্বি ভাইরাস।

কলেরা হোক কিংবা কোভিড, গোটা বিশ্বে তাণ্ডব করেছিল মহামারী। শয়ে শয়ে মানুষ মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছিল। মেডিকেল সায়েন্স বা চিকিৎসা বিজ্ঞান কোমর বেঁধে নেমে পড়েছিল প্রতিষেধক আবিষ্কারে। কিন্তু বলি হয়েছিল বহু জীবন। তাই মহামারীর নাম নিলে আতঙ্কের কালো মেঘ নেমে আসে সকলের জীবনে। কিন্তু অচিরেই কি আরও এর থেকেও ভয়ংঙ্কর বিপদ ঘনিয়ে আসবে মানব সভ্যতার দিকে?

এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে শিগগিরি জেগে উঠতে পারে ‘জম্বি’ ভাইরাস (Zombie Virus)। কয়েদিন আগে করোনার (Covid) নতুন ভাইরাস করে হাইজাম্পে, তৈরি হয়েছিল উদ্বেগ। তারমধ্যে ‘ডিজিজ এক্স’ নিয়ে সাবধানবাণী শুনিয়েছে হু (WHO)। এবার ‘জম্বি ভাইরাস’ (Zombie Virus) নিয়ে উদ্বেগের কথা শোনালেন বিজ্ঞানীরা।

বরফের নিচ থেকে জেগে ওঠার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। উত্তর মেরুর বরফ যে দ্রুত গলছে, এটা নতুন কথা নয়। আগেই এব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার জানা যাচ্ছে, সেই গলন্ত বরফের তলায় লুকিয়ে থাকতে পারে ‘জম্বি’ ভাইরাস। আর অচিরেই তা আমাদের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। ফ্রান্সের এইক্স-মার্শেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জিন-মাইকেল ক্লাভেরি জানিয়েছেন, ‘এই মুহূর্তে অতিমারির আশঙ্কা খতিয়ে দেখে জানা যাচ্ছে, এমন বিপদ লুকিয়ে থাকতে পারে মেরুপ্রদেশের বরফের তলায়।

আমাদের ধারণা, এমন ভাইরাস সেখানে থাকতে পারে যা মানুষকে দ্রুত সংক্রমিত করতে পারে। এবং এর ফলে নতুন কোনও অসুখের জন্ম হবে।’ কেমন এই ভাইরাসের গঠন? সে প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ঠিক কী ভাইরাস বরফের নিচে রয়েছে তা যদিও এখনও পরিস্কার নয় ৷

তবে এর আগে ২০১৪ সালে সাইবেরিয়ায় ক্ল্যাভারির নেতৃত্বে এক বিজ্ঞানীর দল এমন একটি ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছিল যেটা আনুমানিক ৪৮ হাজার ৫০০ বছরের পুরনো৷

সেখান থেকে মনে করা হচ্ছে ওই জীবাণুরা আচমকা জেগে ওঠতে পারে এবং যার থেকে মহামারীর আশঙ্কা বাড়ছে৷ গবেষকরা মনে করেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বরফ গলছে এবং এর ফলে এই ভাইরাসগুলি বেরিয়ে আসছে। এই ভাইরাসগুলির মধ্যে কিছু ভাইরাস ইতিমধ্যেই প্রাণঘাতী সংক্রমণ ঘটিয়েছে। ২০০৩ সালে, সার্স ভাইরাসের একটি নতুন স্ট্রেন চিনের ইউনান প্রদেশে বেরিয়ে আসে।

এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে প্রায় ৮,০০০ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালে, কোভিড-১৯ ভাইরাস বেরিয়া আসে চিনের উহান থেকে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষ মারা গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, জম্বি ভাইরাসের বরফের নীচ থেকে জেগে ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে, এই সম্ভাবনাকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না।

তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। আমরা যদি জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে না পারি, তাহলে এই ধরনের বিপদগুলি আরও বেশি ঘন ঘন ঘটবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password