কবির হোসেন দেওয়ান: গণতন্ত্রের লড়াইয়ে রক্ত-ঘাম ঝরানো এক প্রবাসীর অমূল্য ত্যাগ
নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে হাজারো প্রবাসীর মধ্যে অন্যতম সাহসী নাম—কবির হোসেন দেওয়ান। বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের এই সন্তান দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব পূর্বাঞ্চল বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা যুবদলের সভাপতি হিসেবে প্রবাসীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার জীবন সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও আন্দোলনের প্রতি অটল নিষ্ঠা আজ প্রবাসী সমাজে এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
অক্লান্ত সংগ্রামের কাহিনী
কবির হোসেন দেওয়ান শুধু প্রবাসী রাজনীতির নেতা নন; তিনি ছিলেন তৃণমূলের কণ্ঠস্বর। বিদেশের মাটিতে থেকেও তিনি গণতন্ত্রকামী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, জনমত গঠন করেছেন এবং আন্দোলনকে গতিশীল করেছেন। একের পর এক বৈঠক, সংগঠন গঠন, প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করা—সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তিনি।
ষড়যন্ত্র ও নিপীড়নের শিকার
২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল সৌদি আরবে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ এক ষড়যন্ত্রের সূচনা হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রদূতের ইন্ধনে সাজানো মামলার ফাঁদে ফেলা হয় অনেককে। তার মধ্যেই কবির হোসেন দেওয়ান ছিলেন অন্যতম।
পরবর্তীতে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তাকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। দীর্ঘ রিমান্ড, ভয়াবহ মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মধ্য দিয়েও তিনি ছিলেন দৃঢ়, অটল। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ছিল সাজানো ও মিথ্যা।
হারানো জীবনের হিসাব
এই ষড়যন্ত্র ও দমনপীড়নের ফলে কবির হোসেন দেওয়ান হারিয়েছেন নিজের ব্যবসা, জীবিকার পথ এবং পরিবারের স্বাভাবিক জীবন। নিঃস্ব অবস্থায় তার পরিবার আজ বিপর্যস্ত। অথচ দেশের গণঅভ্যুত্থান ও বিজয়ের পরও তার ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন হয়নি।
প্রবাসীদের প্রতিনিধি, পরিবারের ভরসা
প্রবাসীরা তাকে শুধু নেতা হিসেবে নয়, এক ভাই, এক অভিভাবক হিসেবেও দেখেছেন। অসংখ্য প্রবাসীর সমস্যা সমাধান থেকে শুরু করে বিপদের সময় পাশে দাঁড়ানো—সবখানেই ছিলেন কবির হোসেন দেওয়ান। নিজের স্বার্থ ভুলে দল ও দেশের জন্য কাজ করা মানুষটি আজ অবহেলার শিকার।
হাইকমান্ডের প্রতি আহ্বান
আজ প্রশ্ন উঠছে—
-
কবির হোসেন দেওয়ানের মতো নিবেদিতপ্রাণ নেতার আত্মত্যাগ কি ইতিহাসের পাতায় হারিয়ে যাবে?
-
তার রক্ত-ঘাম ঝরানো সংগ্রাম কি প্রাপ্য সম্মান পাবে না?
-
ধ্বংস হওয়া ব্যবসা, বিপর্যস্ত পরিবার, ভেঙে যাওয়া জীবনের ক্ষতিপূরণ কে দেবে?
উপসংহার
কবির হোসেন দেওয়ান প্রমাণ করেছেন, গণতন্ত্রের লড়াই কেবল দেশের ভেতরে নয়, বিদেশের মাটিতেও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তার অবদান অবিস্মরণীয়, তার আত্মত্যাগ চিরস্মরণীয়।
তাই হাইকমান্ড ও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান—কবির হোসেন দেওয়ানের ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন করুন, প্রবাসীদের সম্মান ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করুন।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন