নওগাঁর "দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ” নামক পত্রিকায় চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ২১ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ আদালতে মামলা

নওগাঁর "দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ” নামক পত্রিকায় চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ২১ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ আদালতে মামলা

নওগাঁয় অনলাইন দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ পত্রিকায় চাকুরী দিবে বলে প্রায় ২১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেবার অভিযোগ উঠেছে পত্নীতলা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী শামিউল আরিফ শাওন সহ নওগাঁর কথিত ৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে পত্রিকায় চাকরি প্রত্যাশী মানিক হোসেন নামে এক যুবক বাদী হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নওগাঁর অনলাইন ”দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ” নামক এক পত্রিকায় চাকুরী দেওয়ার কথা বলে কথিত সাংবাদিক মো.শহিদুল ইসলাম তার সহযোগী মো. আনিছুর রহমান, মো. জহুরুল হক (কাজল), পত্নীতলা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী শামিউল আরিফ (শাওন ) ও মাহবুব আলম ২০ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা আত্যসাৎ করেন।

বাদি মো. মানিক হোসেন জানান, ”দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ” পত্রিকায় চাকুরী দিবেন বলে আমাদের দশ জনের নিকট হতে ধামইরহাট উপজেলার আমাইতারা বাজার এলাকার বাচ্চু মন্ডলের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম, একই উপজেলার বাসুদেবপুর এলাকার রইচ উদ্দীনের ছেলে আনিছুর রহমান, নওগাঁ সদর উপজেলার মখরপুর এলাকার মোজাম্মেল হক এর ছেলে মো. জহুরুল হক ( কাজল ), পত্নীতলা উপজেলার চাঁদপুর এলাকার কাজী আবু হেনা মোস্তফা কামালের ছেলে পত্নীতলা উপজেলা প্রেসক্লাবের কথিত সভাপতি কাজী শামিউল আরিফ শাওন ও ধামইরহাট উপজেলার খেলনা এলাকার মো.ইসমাইল হোসেনের ছেলে মো. মাহবুব আলম তাদের কথিত প্রেসক্লাবের রুমে ২০ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা নেন।

এর মধ্যে আমার কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার, মোশারফ হোসেন শান্তর কাছ থেকে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার, আরিফ হোসেন এর কাছ থেকে ২ লক্ষ, সবুজ হোসেন এর কাছ থেকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার, সাব্বির হোসাইন এর কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৩ হাজার, সজিব হোসেনের কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার, রিমন হোসেন এর কাছে থেকে ১ লক্ষ. রফিকুল ইসলাম ও ময়েন এর কাছ থেকে ৩ লক্ষ ১৮ হাজার, আজিজুল হকের কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ও মোছা. জেবা ফারহার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নেন।

টাকা দেবার কিছুদিন পর যখন আমরা জানতে পারি বিডিসি ক্রাইম নিউজ নামক কোন পত্রিকা সরকারি মিডিয়াভূক্ত নয় এটি একটি ভুঁইফোঁড় পত্রিকা যার কোন ভিত্তি নাই। আমাদের সাথে করে বিভিন্ন এমপি ও সরকারি কর্মকর্তাদের অফিসে নিয়ে গিয়ে এক কপি পত্রিকা হাতে দিয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলতো তাঁরা এই পত্রিকার উপদেষ্টা। পরবর্তীতে আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাইলে শহিদুল ইসলাম গং বিভিন্ন সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম বলে বিভিন্ন ধরণের হুমকি- ধামকি দেন। আমরা আমাদের টাকা ফেরত না পাওয়ায় আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।

দৈনিক বিডিসি ক্রাইম নিউজ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ”বিডিসি ক্রাইম নিউজ” পত্রিকায় ক্রাইম শব্দটি লিখা আছে বলে এই পত্রিকার অনুমোদন পাব না। যার কারণে আমাদের নতুন পত্রিকা ” দৈনিক বাংলার পাতা” নামক পত্রিকার আবেদন নওগাঁ ডিসি অফিসে করেছি যেহেতু নওগাঁর স্থানীয় পত্রিকা হিসাবে অনুমোদন নিব। চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়া বিষয়ে বলেন তিনি।

আসলে টাকা পয়সা আমি সে ভাবে কারো কাছে থেকে নেইনি। মামলার বাদি মানিক হোসেন, মোশারফ হোসেন শান্ত ও সবুজ হোসেন আমাকে তাদের অফিসে কৌশলে নিয়ে গিয়ে মারার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আমার কাছে থাকা ডিসকভার ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল হাতিয়ে নেয় এবং জোর করে এভিডেভিড করে নেয়। সেই মুহূর্তেই আমার কাছে থেকে ফাঁকা চেক ও স্টাম্পে সই করে নিয়ে কিছু দিন পর আমার ধামুইরহাট বাসায় গিয়ে আমার মা বাবাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আবার ৩লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমার পত্রিকায় তারা নিজ থেকে কিছু টাকা খরচ করেছে, আমি এই বিষয়ে তেমন কিছু জানি না।

তবে আমি কারো কাছে থেকে কোন টাকা গ্রহণ করিনি কেউ যদি প্রমাণ সাপেক্ষে আসে আমি তার টাকা দিয়ে দিব। তবে কিছুদিন পূর্বে এহসানুল হক জুয়েল মানিক হোসেন, সবুজ হোসেন, জেবা ফারহার সহ আরো অনেকের কাছে থেকে পত্রিকায় চাকুরী দিবে বলে অনেক টাকা হাতীয়ে নিয়েছে। টাকা নেওয়ার পর যখন তাদের সাথে এহসানুল হক জুয়েল যোগাযোগ বন্ধ করে তালবাহানা শুরু করে তখন আমার কাছে ৪-৫ জন লিখিত অভিযোগ করলে আমি এই বিষয়ে একটি ধামুরহাট থানায় অভিযোগ করেছি।

পত্নীতলা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী শামিউল আরিফ শাওনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password