নাবিক হাদিসুরের মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা

নাবিক হাদিসুরের মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছে পরিবারের সদস্যরা
MostPlay

ইউক্রেনে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলায় নিহত হাদিসুর রহমানের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে শোকে কাতরাচ্ছে বাবা-মা ভাইবোন। সবশেষ বাড়িতে এসেছিলেন মাস ছয়েক আগে। তবে পরিবারের সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ ছিল হাদিসুরের। বুধবার সকালেও বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। জানিয়েছিলেন, আটকে থাকা জাহাজ ছাড়া পেলে শিগগিরই বাড়ি ফিরবেন।

বিয়ের জন্য স্বজনেরা মেয়েও দেখে রেখেছিলেন। কিন্তু বুধবার (৩ মার্চ) ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ হামলার শিকার হয়েছে। ওই দিন স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে এ হামলা হয়। এতে জাহাজে আগুন ধরে নিহত হন হাদিসুর রহমান (২৯)।

হাদিসুর রহমান বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। হাদিস সম্পর্কে বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান তার চাচাতো ভাই। মাকসুদুর রহমান  বলেন, ‘হাদিস ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিল। সে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে পাস করার পর ২০১৮ সাল থেকে ওই জাহাজে ছিল।

অবিবাহিত ছেলেটা সর্বশেষ বাড়িতে এসেছিল মাস ছয় আগে। ’ হাদিসের স্বজনরা জানান, আট বছর ধরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বিভিন্ন জাহাজে চাকরি করেন হাদিসুর। বুধবার জাহাজ থেকে ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্সকে ফোন করেন হাদিস। তবে বিকট শব্দের কারণে কিছুই শুনতে পারেননি তিনি। এর মধ্যে হাদিসুর জাহাজের সামনে বাইরে অবস্থান করায় রকেট হামলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিহত হয়েছেন।

হাদিসুর রহমানের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স বলেন, 'জাহাজে আঘাত হানার সময় বড় ভাই বাইরে এসে মুঠোফোনে আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। তবে হঠাৎ একটি গোলা এসে পড়ে জাহাজটিতে। বিকট শব্দের কারণে কিছুই শুনতে পাইনি। ' এদিকে একমাত্র ছেলে নিহত হওয়ার খবর পেয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন হাদিসুরের মা-বাবা। শোকে মুহ্যমান পরিবারের অন্য স্বজনেরা।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁরা খবরটা জানতে পারেন। হাদিসুর রহমানের মা আমেনা বেগম ছেলের শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন। তিনি বলেন, 'বুধবার হাদিস আমাকে ফোন দিয়েছিল। ডাক্তার দেখিয়েছি কিনা জানতে চেয়েছে। এরপর সবশেষে ভিডিও কলে কথা হয়। রাতে তার মৃত্যুর খবর পাই। ' জানা যায়, বাংলাদেশের জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়।

ওই দিনই দেশটিতে রাশিয়ার হামলা শুরু হলে বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে জাহাজে আটকা পড়েন ক্যাপ্টেন জি এম নুর ই আলম, চিফ ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুকসহ ২৯ বাংলাদেশি নাবিক। ইউক্রেনে হামলা শুরুর সপ্তম দিনে বাংলাদেশি জাহাজটিতে আঘাতের ঘটনা ঘটল। সমুদ্রগামী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ২০১৮ সালে বিএসসির বহরে যুক্ত হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password