আজকের ডিল নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগের সয়লাব

আজকের ডিল নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগের সয়লাব

ধামাকা, ই-ভ্যালি বা ই-অরেঞ্জ ডটকমের মতোই একটি ই-কমার্স প্লাটফর্ম আজকের ডিল ডটকম। ই-ভ্যালি ও ই-অরেঞ্জে মোটা অঙ্কের লাভের আশায় টাকা জমা দিয়ে এখন পথে বসেছেন লক্ষাধিক গ্রাহক।  আর আজকের ডিল ডটকমে ছাড়ের পণ্যের বেড়াজালে আটকে গেছেন অনেকে। কিছুটা ছাড়ে ভালো পণ্যের ছবি দেখে নানান পণ্য কিনতে আজকের ডিলে অর্ডার করেছেন অনেকে। ভালো পণ্যের ছবি দেখালেও সরবরাহ করা হচ্ছে নষ্ট পণ্য- এমন অভিযোগের শেষ নেই। সমাধানের আশায় উত্তর খুঁজতে অনেকে যোগাযোগ করেন ই-কমার্স প্লাটফর্ম আজকের ডিল ডটকমের ওয়েবসাইটের কমেন্ট সেক্টরে। কিন্তু সমস্যার সমাধান তো দূরে কথা, অভিযোগের কোনো জবাব মেলে না সেখানে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক মাসে আজকের ডিল ডটকমসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। লোকবল সংকটের কারণে অভিযোগের চাপে অনেকটা দিশেহারা প্রতিষ্ঠানটির কর্তা ব্যক্তিরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজকের ডিল ডটকমের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকারে জমা পড়ে ১৮২টি অভিযোগ। ইতিমধ্যে ১৬৭টি নিষ্পত্তি হয়েছে বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

আজকের ডিল ডটকমের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে, ‘এলইডি ডিজিটাল পাওয়ার ডিসপ্লে ব্লুটুথ হাই সাউন্ড কোয়ালিটি’ নামের একটি চটকদার হেডফোনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। সেখানে ছাড়ে দাম দেখানো হয়েছে মাত্র ৫১০ টাকা, যা বাজারমূল্যের অনেক কম। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে হুবহু একই পণ্য বাজারে বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকায়। কিন্তু এই পণ্য এত কমে কীভাবে দিচ্ছে আজকের ডিল তা জানা নেই গ্রাহকের। তবে পণ্যটি হাতে পাওয়ার পর সস্তার তিনি অবস্থা বুঝতে পারেন। কিন্তু অভিযোগ করে সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন না তারা।

আজকের ডিল ডটকমের এমনই একজন প্রতারিত গ্রাহক লিখেছেন, ‘ভুলেও অনলাইনে এটা কিনবেন না। আমি কিনেছিলাম। দুটির মধ্যে একটি নষ্ট। পাঠানোর সময় পরীক্ষা না করেই পাঠানো হয়।’

প্রণব নামের অন্য এক গ্রাহক লিখেছেন, ‘দুইটা একসাথে কানেক্ট হচ্ছে না। একটা মিডিয়া পাচ্ছে আর একটা কল পাচ্ছে।’ ‘সাউন্ডের বে্যজ কম’ লিখেছেন সামিউল ইসলাম নামের এক গ্রাহক।

এদিকে ‘১২০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের পাওয়ার ব্যাংক’ নামের একটি পাওয়ার ব্যাংকের বিজ্ঞাপনে নির্ধারিত মূল্য ৩১৬ টাকা দেখিয়ে ছাড়ে দাম দেখানো হয়েছে মাত্র ১৫৮ টাকা। বাজারমূল্যের অনেক কম দাম দেখে কিনেছেন অনেকে। কিন্তু তারা যে ঠকেছেন, তা বোঝা যায় কমেন্ট সেক্টরে মন্তব্যে। অনেকে গালিগালাজ করে নানা কিছু বলেছেন সেখানে। অভিযোগ করেও কোনো জবাব পাননি।

মো. রাকিব লিখেছেন, ‘ভুয়া, চাইবেন ১টা পাবেন আরেকটা, সব বাটপার।’ মো. নজরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘বাজে, নষ্ট প্রোডাক্ট। মোবাইল চার্জ হয় না। প্রতারণা করছে।’

আবু কাসেম নামের এক ভুক্তভোগী লিখেছেন, ‘এরা সবগুলো প্রতারক। আমি ভোক্তা অধিদপ্তরে মামলা করমু এদের নামে।’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘সম্পূর্ণ ভুয়া প্রোডাক্ট। টাকা জলে দিয়েছিলাম।’

এমনই শত শত অভিযোগ আর কমেন্টে সয়লাব আজকের ডিল ডটকমের ওয়েবসাইট।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘ওয়েবসাইটের গ্রাহকদের অভিযোগ ও মতামতের সুনির্দিষ্ট সমাধান এবং উত্তর আমাদের মার্চেন্টদের দেওয়ার নিয়ম। আমাদের এখানে হাজার হাজার মার্চেন্ট থাকে, তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ কমেন্টের উত্তর নাও দিতে পারে। আমরা তো তাদের জোর করে উত্তর দেওয়াতে পারব না।’

আজকের ডিলের দায়িত্ব সম্পর্কে ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘যদি কেউ অগ্রিম টাকা দিয়ে থাকে এবং প্রডাক্ট ডেলিভারি না পায়, এমন সব কেস দেখার দায়িত্ব আমাদের। যদি কেউ পেমেন্ট করে প্রডাক্ট না পেয়ে থাকে সেটার জন্য সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব আমাদের।’

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password