পদ্মা নদীতে মায়ের সঙ্গে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ ৫ বছরের শিশু

পদ্মা নদীতে মায়ের সঙ্গে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ ৫ বছরের শিশু

পদ্মা নদীতে মায়ের সঙ্গে গোসলে গিয়ে রোববার নিখোঁজ হয়েছে ৫ বছর বয়সী শিশু। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে মায়ের সঙ্গে গোসলে গিয়ে রোববার নিখোঁজ হয়েছে ৫ বছর বয়সী শিশু মো. তুহিন ওরফে সাব্বির প্রামাণিক। নিখোঁজ তুহিন বাহিরচর দৌলতদিয়া ছাত্তার মেম্বার পাড়ার আমিরুল ইসলাম প্রামাণিক ও তাছলিমা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে।

দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তুহিন সবার ছোট। তুহিনের বাবা আমিরুল ফেরিঘাট এলাকার জেলে। শিশুটির সন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চেষ্টার পর অভিযান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে। ঈদের আগের দিন ছোট্ট সন্তানের এমন নিখোঁজের কারণে ঈদের আনন্দ যেন বিষাদে পরিণত হয়েছে ওই পরিবারে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তুহিনের মা তাছলিমা বেগম বলেন, ‘বড় ছেলে ঈদ করতে ঢাকা থেকে বাড়ি এসেছে। ওর পরনের প্যান্ট ময়লা হওয়ায় ধোয়ার জন্য বাড়ির কাছে ৬ ও ৫ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝে পদ্মা নদীতে যাই। এ সময় আমার কলিজার ধন গোসল করতে আমার পেছন-পেছন আসে। বড় ছেলের প্যান্ট ধোয়া শেষে নিজেই গোসল করে দেখি তুহিন নেই। কখন যে সে পানিতে পড়ে গেছে, তা মোটেও টের পাইনি। এখন তো আর খুঁজে পাচ্ছি না।’

পদ্মার পাড়ের মুদিদোকানি ও প্রতিবেশী বারেক মৃধা বলেন, ‘বিকেল চারটার দিকে বাড়ির সামনে ৫ ও ৬ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝখানে পদ্মা নদীর পাড়ে বসে গৃহবধূ তাছলিমা তাঁর বড় ছেলের পরনের কাপড় ধুতে যান। কিছুক্ষণ জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকেন। তাঁর চিৎকারের আওয়াজ পেয়ে আমরা সবাই দৌড়ে নদীর ধারে যাই।

এ সময় তুহিনের নিখোঁজের সংবাদ শুনে সবাই নদী ও আশপাশের এলাকায় খোঁজ করতে থাকেন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেও কোনো হদিস না পাওয়ায় দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ও গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সদস্যরা এসে সন্ধান করতে থাকেন। পরে তাঁরা ব্যর্থ হওয়ায় পাটুরিয়া থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি সদস্যরা এসে খোঁজ করতে থাকেন।’

নিখোঁজ তুহিনের বড় ভাই তুষার প্রামাণিক বলেন, তিনি ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে শনিবার রাতে বাড়ি আসেন। রোববার তাঁর পরনের কাপড়চোপড় ধোয়ার জন্য নদীর পাড়ে যান মা তাছলিমা। তাঁর পেছন-পেছন ছোট ভাই তুহিন ওরফে সাব্বির যায়। কাপড়চোপড় ধোয়া শেষে মা তুহিনকে না পেয়ে চিৎকার করতে থাকে। এখন পর্যন্ত ছোট ভাইয়ের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা বিকেলে এসে কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করার পর সন্ধ্যায় চলে যান।

এখন ঈদ বলতে কিছু নেই।’ গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ফেরিঘাটে পৌঁছাই। নৌ পুলিশের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা খোঁজ করে না পেয়ে পাটুরিয়া থেকে ডুবুরি দলের সদস্যদের আনা হয়।

পদ্মা নদীর স্রোতের কারণে রাতের বেলায় অভিযান চালানো ঝুঁকিপূর্ণ বলে ডুবুরি দল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত চেষ্টার পর অভিযান বন্ধ করে। সোমবার সকাল থেকে আবার অভিযান চালানোর কথা রয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password