প্যারিস ভিত্তিক একটি এনজিও, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও বিশ্বের প্রথম সারির ১৭টি মিডিয়ার একত্রিত অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সর্বশেষ প্রকাশিত রিপোর্টগুলোতে দেখা যায় বিশ্বের তিনজন প্রেসিডেন্ট, ১০ জন প্রধানমন্ত্রী এবং একজন রাজাকে ইসরায়েল পেগাসাস নামে একটি স্পাই সফটওয়্যার দিয়ে নজরদারিতে রেখেছে।

তাদের মধ্যে আছেন তিনজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট- ফ্রান্সের ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ, দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিল রামাফোসা এবং ইরাকের বারহাম সালিহ।

আর দশ জন প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে তিনজন এখনও ক্ষমতায় আছেন। তারা হলেন পাকিস্তানের ইমরান খান, মিশরের মোস্তাফা মাদবউলি এবং মরক্কোর সাদ-এদিন আল ওথমানি।

আর যে সাতজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতায় থাকা অবস্থাতেই নজরদারির জন্য টার্গেট করা হয় তারা হলেন লেবাননের সাদ হারিরি, উগান্ডার রুহাকানা রুগুন্ডা, কাজাকস্তানের বাকিতজান সাগিনতায়েব, ফ্রান্সের এডওয়ার্ড ফিলিপে, বেলজিয়ামের চার্লস মিশেল,আলজেরিয়ার নুরুদিন বেদুই ও ইয়েমেনের ওবায়েদ বিন দাঘর।

আরো টার্গেটে হয়েছেন মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহামেদ।

তারা কেউই তাদের মোবাইল ফোন সেট অনুসন্ধানকারী বিশেষজ্ঞদের হাতে তুলে দেননি। ফলে পেগাসাস স্পাইওয়্যার তাদের মোবাইল ফোনে ঢোকানো সম্ভব হয়েছিল কিনা বা ঢোকানোর পর তা দিয়ে তাদের ওপর নজরদারি করা হয়েছিল কিনা এ বিষয়ে কোনো ফরেনসিক বিশ্লেষণ করা যায়নি।

পেগাসাস নামের এই ইসরায়েলি স্পাই সফটওয়্যার গোপনে মোবাইল ফোনে ঢুকিয়ে দিয়ে যে বিভিন্ন রাষ্ট্রে নজরদারি করছে তা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে অনুসন্ধান করা হলে অত্যন্ত স্পর্শকাতর সব রাজনৈতিক তথ্য বেরিয়ে আসছে দিন দিন।

কয়েকটি মাস ধরে চলা এই অনুসন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্যবহার করা ৫০ হাজারেরও বেশি ফোন নম্বর পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট , প্রধানমন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, বিজ্ঞানী, বিচারক ইত্যাদি।

এদিকে গত কয়েকদিন ধরে পেগাসাস স্পাইওয়্যারের বিক্রেতা ইসরায়েলি কোম্পানি এনএসও গ্রুপ ক্রমাগত বলে চলেছে তাদের সফটওয়্যার নিয়ে এসব অভিযোগ মনগড়া ও অসত্য।

আবার অনুসন্ধানী প্রকল্পের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে এনএসও আরো বলেছে, 'ক্রেতা রাষ্ট্রগুলো কীভাবে এই সফটওয়্যার ব্যবহার করছে তার ওপর তারা নিয়মিত নজর রাখে এবং শর্ত ভাঙলে সফটওয়্যারটির ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়।' কিন্তু এ পর্যন্ত শর্ত ভাঙার দায়ে এনএসও কোনো দেশে তাদের সার্ভিস বন্ধ করেছে বলে কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।