ডানেডিনে হতচ্ছিরি, শ্রীহীন ব্যাটিং করে ১৩১ রানে অলআউট। ৪৮ ঘণ্টা পর ক্রাইস্টচার্চে বুক ভরা সাহস ও কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিয়ে প্রথম ম্যাচের ভুল-ত্রুটি কাটিয়ে ২৭১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। দ্বিগুণেরও বেশি রান। এত অল্প সময়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে, তাও নিউজিল্যান্ডের অনভ্যন্ত ও প্রতিকুল কন্ডিশনে ব্যাটিংয়ের এমন পরিবর্তন, চোখে দেখেও যেন বিশ্বাস করা কঠিন।
প্রথম ম্যাচে টাইগারদের নেতিবাচক ও আড়ষ্ট ব্যাটিং দেখে যিনি ছিলেন চরম হতাশ, দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যাটিং কোচ ও এক্সপার্ট নাজমুল আবেদিন ফাহিম রীতিমত বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। সাকিব, মুশফিক আর তামিম যাকে মেন্টর মানেন, ব্যাটিংয়ের এতটুকু সমস্যা হলেও যার দ্বারস্থ হন, সেই ফাহিম খুব অবাক। ক্রাইস্টচার্চে টাইগারদের ব্যাটিং দেখে সাংবাদিকের সাথে মুঠোফোন আলাপে ফাহিম বলেছিলেনও, ‘তামিম, মিঠুন, সৌম্য আর মুশফিকরা এতটা ঘুরে দাড়াবে, আমি তা ভাবিনি।’
কিউই ক্যাপ্টেন টম ল্যাথাম আর মিডল অর্ডার জেমস নিশামের দু’দুটি লোপ্পা ক্যাচ ফেলে না দিলে হয়ত দৃশ্যপট অন্যরকম হতে পারতো। জিততেও পারতো বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে দলের ব্যাটিং দেখে কোনো মন্তব্য না করলেও ক্রাইস্টচার্চের উজ্জ্বল ও সাহসী-সাবলীল উইলোবাজিতে বেশ সন্তুষ্ট বাংলাদেশের ইংলিশ ব্যাটিং কোচ জন লুইস। তিনিও মানছেন ব্যাটিংয়ের বেশ একটা বড়সড় উন্নতি ঘটেছে ক্রাইস্টচার্চে।
ডানেডিনে ব্যাটিংটা বেশি খারাপ হওয়ার দুটি কারণ চিহিত করেছেন জন লুইস। প্রথমমতঃ সকালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা। আর দ্বিতীয়তঃ নিউজিল্যান্ডের ধারালো ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে প্রথম ১০ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া।টাইগার ব্যাটিং কোচের মূল্যায়ন, ‘ডানেডিনের পিচে আগে বোলিং করাটাই যুক্তিযুক্ত ছিল; কিন্তু টস হারে আমাদেরকেই আগে ব্যাট করতে হয়েছে।’
ক্রাইষ্টচার্চের ব্যাটিং সম্পর্কে জন লুইসের মন্তব্য, ‘আসলে ক্রাইস্টচার্চের উইকেটটাই সমানতালে লড়ার অনুকুল ক্ষেত্র ছিল। আমার মনে হয় প্রস্তুতি পর্বটা যেমন হয়েছে, ক্রাইস্টচার্চে ছেলেরা তেমন পারফরমেন্সই করেছে। তারপরও আমি খুব ভাল বলবো না। কারণ আমরা শেষ পর্যন্ত জিতিনি। হেরে গেছি। তারপরও আমি বলবো আমরা রাইট ডিরেকশনে উঠে দাঁড়িয়েছি।’
অল্প কদিন কাজ করেই জন লুইসের জানা হয়ে গেছে, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মূল সমস্যার জায়গা কী কী? তার উপলব্ধি ও অনুভব, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দেশের বাইরে মূল সমস্যা হলো, কোয়ালিটি সিম বোলিং আক্রমণ এবং একটু বেশি বাউন্সি পিচে নতুন বল সামলানো।
সেই কাজে তামিম বাকিদের চেয়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষ- এমন মন্তব্য করে জন লুইস বলেন, ‘তামিমের অভিজ্ঞতা বাকিদের চেয়ে বেশি। দ্বিতীয় সেশনে বোলারদের একটা লড়াকু ও নির্ভর করার মত পুঁজি গড়তে যে ভিতটা দরকার, সেটা তামিম করে দিতে পারে। কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’
তবে জন লুইসের মুভে সবচেয়ে বেশি প্রশংসা মোহাম্মদ মিঠুনের। তার ভাষায়, ‘মিঠুন ক্রাইস্টচার্চে অসাধারণ খেলেছে। সে বলের লাইনের খুব কাছে শরীর ও ব্যাট এনে খেলার চেষ্টা করেছে।’
মিঠুনের ব্যাটিংয়ের টেকনিক্যাল দিক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে টাইগার ব্যাটিং কোচ বলেন, ‘সে অফসাইডে বেশি না দেখে লেগ সাইডে খেলার চেষ্টা করেছে। যেখানে ঢাকা ও চট্টগ্রামের চেয়ে একটু বাউন্স বেশি, সেখানে এমন খেলা যায়।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন