বিলের মুখ ভরাট করায় জমিতে জলাবদ্ধতা

বিলের মুখ ভরাট করায় জমিতে জলাবদ্ধতা

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের সোনাকানিয়া এলাকায় ১টি খাল ও ৪টি বিলের মুখ ভরাট করায় ওই এলাকায় প্রায় ৩শ’ বিঘা ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই উপজেলার কৃষি ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। 

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দক্ষিণে জোড়গাছা ইউনিয়নের উত্তর বয়ড়া, উত্তর চরপাড়া ও দক্ষিণ সোনাকানিয়া গ্রামের অবস্থান। ওই তিনটি গ্রামে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের বসবাস। যাতের অধিকাংশ সরাসরি কৃষি কাজের সাথে জড়িত। সোনাকানিয়া গুড়াভাঙ্গা বাঙালী নদী থেকে একটি খালের উৎপত্তি হয়ে সোনাকানিয়া গ্রামের মধ্যে দিয়ে খালটি গ্রামের দক্ষিণ পাশে গিয়ে সৌলগাড়ী বিল ও বাতানের বিলে মিলিত হয়েছে। সম্প্রতি একটি মহল সোনাকানিয়া গ্রামের দক্ষিণ পাশে ওই খালটির মুখ বন্ধ করে দেয়। এতে করে ওই খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী বেড়ের ঘাটের বিল, নয় আনার বিল, মৌলগাড়ি বিল ও বাতানের বিলের মিলনস্থল ভরাট করে দেওয়ায় ওই এলাকার প্রায় ৩শ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। 

স্থানীয় সোনাকানিয়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি সোনাকানিয়া খালের মুখের পাশাপাশি ওই তিনটি বিলের মিলনস্থলে মাটি দিয়ে ভরাট করে মাছ চাষ করায় কৃষকের ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি কৃষক আসন্ন ইরি-বোরো মৌসুমের বীজতলা তৈরির জন্য ব্যবহৃত খাল ও বিলের জায়গা ব্যবহার করতে পারছে না। 

এ বিষয়ে স্থানীয় জোড়গাছা ইউপি চেয়ারম্যান রোস্তম আলী মন্ডল জানান, আবহমানকাল থেকে সোনাকানিয়া গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া খালে মানুষ ও গবাদি পশু গোসল ও কৃষি ফসলে সেচ সুবিধা দিয়ে আসছিল। খালটির মুখ বন্ধ করায় খালটি এখন কচুরি পানায় পরিপূর্ণ হয়েছে। ফলে ওই খালের পানি ব্যবহার করার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমনকি ওই বিলের পানিতে মশা মাছির উপদ্রব বেড়ে গেছে। মশা-মাছির কামড়ে খালের দুপাড়ের মানুষ মশারি ছাড়া রাতে ঘরে ঘুমাতে পারছে না। এমনকি ওই পানিতে গোসল করতে গিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ আহমেদ জানান, ১ ইঞ্চি পরিমাণ কৃষি জমিও যাতে পড়ে না থাকে এজন্য নির্দেশনা দিলেও সোনাকানিয়া এলাকায় প্রায় ৩শ বিঘা আবাদী জমি জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। এতে করে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী একটি অভিযোগ তার দপ্তরে জমা দিয়েছেন। কৃষকদের কথা বিবেচনা করে ঘটনাস্থলে গিয়ে খালটির মুখ খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password