মিয়ানমারের নাগরিকদের অস্থায়ী আশ্রয় দিল যুক্তরাষ্ট্র

মিয়ানমারের নাগরিকদের অস্থায়ী আশ্রয় দিল যুক্তরাষ্ট্র
MostPlay

যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলছে, সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমারের যেসব নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে আটকা পড়েছেন, অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদায় তাদের এখানে অবস্থান করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারের সাবেক নাম ব্যবহার করে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো মেয়োরকাস বলেন, বার্মায় সামরিক অভ্যুত্থান এবং নাগরিকদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর নৃশংস সহিংসতার প্রেক্ষাপটে দুর্বিষহ ও জটিল মানবিক সংকটে পড়েছেন দেশটির নাগরিকেরা।

‘এই ভয়াবহ পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে, বার্মাকে অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদায় (টিপিএস) অভিষিক্ত করেছি, যাতে বার্মিজ নাগরিক ও নিয়মিত বাসিন্দারা এখানে অস্থায়ী সুরক্ষা মর্যাদায় অবস্থান করতে পারেন।’

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশে ফিরে যেতে সক্ষম না হওয়ায় বেশ কয়েকটি দেশের নাগরিককে টিপিএস সুরক্ষা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে সীমিত মেয়াদে তারা যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে পারবেন। এটা ১২ মাস কিংবা তার চেয়েও বেশি সময় হতে পারে। দুর্ভোগ ও হুমকি অব্যাহত থাকলে এই মেয়াদ বাড়ানোরও নিয়ম আছে।

এদিকে মিয়ানমারের ২০০ পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবার বর্তমানে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। শুক্রবার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বিক্ষোভকারীদের মরধর ও নির্যাতন করছে কর্তৃপক্ষ। তাতে অংশ নিতে আমরা অনিচ্ছুক।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে বিক্ষোভে ধরপাকড়ের এখন পর্যন্ত ৭০ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের বহু কর্মকর্তা এই ধরপাকড়ে অংশ নিতে অস্বীকার জানিয়েছেন। তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় রাজ্য মিজোরামে প্রবেশ করেন।

শুক্রবার পর্যন্ত ২৬৪ জন মিয়ানমারের নাগরিক পালিয়ে ভারতে চলে গেছেন। তাদের মধ্যে ১৯৪ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার। সামরিক বাহিনীর অধীন পুলিশ বাহিনীতে কাজ করতে অনীহা থেকেই তারা ভারতে আশ্রয় নেন বলে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এদিকে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ-আন্দোলন ঠেকাতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সেনা সরকার। রাজপথের বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রতিদিনই গুলি চালানো হচ্ছে। রাতের আঁধারে ঘরে ঘরে চালানো হচ্ছে তল্লাশি অভিযান। পুলিশ হেফাজতে হত্যা, গুম-খুন-অপহরণ চলছে অহরহ।

এবার টার্গেট করা হয়েছে অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। ডাক্তার-নার্স-ইঞ্জিনিয়ার ও সরকারি চাকরিজীবীদের উদ্দেশে আগেই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, কাজে না ফিরলে ৮ মার্চের পর থেকে গণহারে বরখাস্ত করা হবে। সেই রেশ ধরেই বুধবার দিনেদুপুরে অভিযান চালানো হলো ইয়াঙ্গুনের একটি বড় রেলস্টেশন ও রেলস্টাফ কলোনিতে। উচ্ছেদ করা হলো শতশত রেল পরিবারকে।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয় সামরিক জান্তা। প্রতিবাদে দুদিন পর থেকে নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চিকিৎসক ও শিক্ষকদের নেতৃত্বে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছে বেসরকারি খাতের কর্মীরাও। জাতিসংঘের তথ্যমতে, সরকারের ১০ লাখ কর্মচারীর এক-তৃতীয়াংশই এখন কর্মবিরতি পালন করছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password