টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো হারিয়ে সিরিজ শুরু টাইগারদের

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো হারিয়ে সিরিজ শুরু টাইগারদের

ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষেই অনুমান করা হচ্ছিল এবার ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পাবে বাংলাদেশ। দুই দলের আগের ১০ ম্যাচে কোন জয় না পাওয়া বাংলাদেশের এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুধু ম্যাচ নয় সিরিজ জয়ের রয়েছে সুবর্ন সুযোগ৷ মুলত টাইগারদের সাম্প্রতিক ফর্ম ও ঘরের মাঠে সুবিধাই এমন স্বপ্ন দেখাছিল ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে শুরু করে টাইগার ভক্তরা। সবার ধারণা সত্যি করে দিয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে তাদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোনিম্ন রানের লজ্জায় ডুবিয়ে ৭ উইকেটের জয় নিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো পরাজিত করতে মাত্র ৬১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। মাত্র ৭ রান তুলতেই দুই ওপেনার কে হারায় টাইগাররা। লিটন ও নাঈম মাত্র ১ রান করেই সাজঘরে ফিরে যান৷ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই অফ স্টাম্পের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া ফুল লেংথ বল লফটেড ড্রাইভে শর্ট কাভারে তুলে দেন নাঈম আর বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেলের ঝুলিয়ে দেওয়া বলে ড্রাইভ করার চেষ্টা করেন লিটন। বল টার্ন বরে ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে যায় কিপারের গ্লাভসে। ফলো থ্রুতে বাইরে আসে লিটনের পা। কিপার টম ল্যাথাম ফেলে দেন বেলস। এরপর দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেব দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। রান তোলার গতি মন্থর হলেও অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার মিলে ৩০ রানের জুটি গড়ে দলের বিপদ ভালই সামাল দেন।

দলীয় ৩৭ রাবের সময় রাচিন রবীন্দ্রর বলে ৩৩ বলে ২ চারে ২৫ রান করে সাকিব আল হাসান টম ল্যাথামের গ্লাভসে ধরা পড়লে ভাঙে এই জুটি। সাকিবের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে আর কোন বিপদ ঘটতে দেননি। দুই ভায়রা ভাই ৩০ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশের ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেই করেই মাঠ ত্যাগ করেছেন। মুশফিক ১৬* ও মাহমুদউল্লাহ ১৪* রানে অপরাজিত থাকেন৷ নিউজিল্যান্ডের হয়ে এজাজ প্যাটেলে ৪ ওভার বল করর ৭ রান খরচায় ১টি উইকেট শিকার করেন৷ এছাড়া রাচিন রবীন্দ্র ও কোল ম্যাককনচি ১টি করে উইকেট শিকার করেন৷

এর আগে টাইগারদের বোলিংয়ে রীতিমত পর্যদুস্ত কিউইরা। টম ল্যাথামের দল ১৬.৫ ওভারেই অলআউট হয়েছে ৬০ রানে। এটি যৌথভাবে তাদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বনিম্ন। এর আগে এই ফরমেটে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে কমে অলআউট হওয়ার রেকর্ডটিও ছিল ৬০ রানের। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশেরই মাঠে (চট্টগ্রামে) তাদের ১৫.৩ ওভারে গুটিয়ে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের তৃতীয় বলেই প্রথম ধাক্কাটা খেয়েছিল কিউইরা। রাচিন রবীন্দ্রকে নিজের বলেই ক্যাচ বানিয়ে ফেরান শেখ মেহেদী হাসান। ৭ রানের মাথায় ফেরেন উইল ইয়ং। স্কোরবোর্ড এক রান যোগ করতেই ফেরেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। এরপর টম ব্লান্ডেল ফিরলে স্কোরবোর্ড ৯ রান উঠতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে কিউইরা। এরপর চাপ সামাল দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেন অধিনায়ক ল্যাথাম ও হেনরি নিকোলস। পঞ্চম উইকেটে দুজনে গড়েন ৩৪ রানের পার্টনারশিপ।

তবে তাদের সাজঘরে ফিরিয়ে পথের কাঁটা দূর করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। খেলার ১১তম ওভারে সাইফউদ্দিনের বলে নাসুম আহমেদকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ল্যাথাম। ল্যাথাম ২৫ বলে ১৮ ও নিকোলস ২৪ বলে ১৭ রান করেন। এরপরই ভেঙে যায় সব প্রতিরোধ। কোল ম্যাকঞ্চি (০) আর হেনরি নিকোলস (২৪ বলে ১৮) ফেরেন পরের টানা দুই ওভারে। ম্যাকঞ্চিকে ফেরান সাকিব, নিকোলসকে সাইফউদ্দিন। এরপর লেজটা উপড়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, শেষ ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনিই। কাটার মাস্টারের মোট খরচ ১৩ রান। এছাড়া বাংলাদেশের হয়ে সাকিব আল হাসান ৪ ওভারে ১০, নাসুম ২ ওভারে ৫ আর সাইফউদ্দিন ২ ওভারে ৭ রান দিয়ে নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। বাকি ১টি উইকেট শেখ মেহেদি হাসানের। ৪ ওভারে তিনি খরচ করেন ১৫ রান। দুই দলের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আগামী ৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার একই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password