নারী দলের অস্থায়ী প্রধান কোচ শাহনওয়াজ

নারী দলের অস্থায়ী প্রধান কোচ শাহনওয়াজ

মার্ক রবিনশনের নারী দলের কোচ হওয়ার জোর গুঞ্জন ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই ইংলিশ ক্রিকেটারকে পাওয়া যায়নি। তাই সালমা খাতুন-রুমানা আহমেদরা অনুশীলন করছেন প্রধান কোচ ছাড়াই। তবে আগামী মাসেই বাংলাদেশ গেমস দিয়ে মাঠে ফিরছে নারী দল। ৬ই মার্চ থেকে সিলেটে শুরু হবে এই টুর্নামেন্ট। অন্যদিকে সেই মাসেই দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং নারী দল আসবে সফরে। এই আসর দিয়ে নারীরা ফিরবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও। কিন্তু এরই মধ্যে বিদেশি কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া চললেও কবে নাগাদ নতুন নিয়োগ হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।যে কারণে দু’টি আসরের জন্য অস্থায়ীভাবে প্রধান কোচের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দেশের সাবেক ক্রিকেটার শাহনওয়াজ শহীদ শানুকে।

তিনি ২০১৪ তে দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নারী দলের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত ক্রিকেট ক্যারিয়ারে খেলেছেন ঢাকা লীগে। তবে জাতীয় দলে সুযোগ হয়নি। এছাড়াও তিনি নারী দলের ব্যাটিং কোচেরও দায়িত্ব সামলাবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবি’র নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদের। বিডিটাইপকে তিনি বলেন, ‘খুব দ্রুতই আমরা বিদেশি প্রধান কোচ নিয়োগ দিতে আশাবাদী। তবে আপাতত অস্থায়ী প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে শাহনওয়াজকে। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ পর্যন্ত কাজ করবেন। এছাড়াও ব্যাটিং কোচ হিসেবেও কাজ করবেন তিনি। এই সময়ের আমরা বিদেশি একজনকে নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করবো আশা করি।’

৬ই মার্চ থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ গেমস। সেই লক্ষ্যে সিলেটে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের ৩৪ সদস্য অনুশীলন করে যাচ্ছেন। এছাড়াও ঢাকায় জাতীয় ইমার্জিং নারী দলের ৩১ জন অনুশীলন করছে। মোট ৬৫ জন ক্রিকেটার লাল, সবুজ ও নীল দলে ভাগ হয়ে বাংলাদেশ গেমসে অংশ নিবেন। ফাইনাল মাঠে গড়াবে ১২ই মার্চ। এখান থেকেই বেছে নেয়া হবে ২২ জনের প্রাথমিক ইমার্জিং দল। এরপর আবারো বাছাইয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপেক্ষ চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে জাতীয় দল নিয়ে কাজ শুরু করেছেন আস্থায়ী প্রধান কোচ শাহনওয়াজ শহীদ শানু। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে আমি নারী দলের সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছি আমি। যে কারণে ওদের নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার আছে। ওদের ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দেবো। মেয়েদের ফিটসেন দারুণ। এখন সেটাকে বাড়াতে হবে। আশা করি আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে নারী দলকে এগিয়ে নিতে পারবো।’

মার্চ ও এপ্রিলে নারী দলের মিশন নিয়ে অপারেশন্স ম্যানেজার তৌহিদ মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ গেমস ও দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং সিরিজের জন্য শাহনওয়াজ শহীদ শানুকে প্রধান কোচের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেই পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। সঙ্গে সহকারী কোচ হিসেবে আগেই কাজ শুরু করেছেন ফয়সাল হোসেন ডিকেন্স। এছাড়াও স্পিন বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করবেন ওয়াহেদুল গনি। ঢাকায় ৩১ জন ক্রিকেটার অনুশীলন করছেন তারা বাংলাদেশ গেমসে অংশ নিতে ২রা তারিখ সিলেট যাবে। সেখানে আমরা তিনটি দলে ভাগ করে গেমসে খেলাবো।

এরপর আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ইমার্জিং দল ঘোষণা করবো। সব ম্যাচই হবে ওয়ানডে ফরম্যাটে। কারণ আমাদের সামনে ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব রয়েছে।’ নারী দল নিয়ে আশাবাদী স্পিন কোচ ওয়াহেদুল গনিও। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্পিন বিভাগটা ভালো। আমি মনে করি অন্যান্য কিছু দেশের চেয়ে আমরা ভালো আছি। কিন্তু টেকটিক্যাল জিনিসগুলোতে এরা অত বেশি পারদর্শী না। আমরা চেষ্টা করছি জিনিসগুলো শেখানোর। খেলাটা ওরা পারে, কিন্তু খেলাটা কীভাবে খেলতে হবে সেটা এখনো গুছিয়ে উঠতে পারেনি। সবচেয়ে বড় কথা, ওরা বেশি টি-টোয়েন্টি খেলে। এদের নেট থেকে শুরু করে সব জায়গায় মারার প্রবণতা, কিন্তু বল যে থামাতে হবে, সিঙ্গেল নিতে হবে এমন টেকটিক্যাল জিনিসগুলোর অভাব আছে। আমরা এসব নিয়েই কাজ করছি।’

অন্যদিকে নারী দলের তারকা ক্রিকেটার জাহানারা আলম দেশি কোচদের ওপর আস্থা রাখতে চান। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়না হেড কোচের কোনো অভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি। এটা আসলে পুরোটাই বোর্ডের ব্যাপার। তবে আমাদের সহকারী কোচ আছে, তার সাথে আমাদের স্কিল ভিত্তিতে কোচ দেয়া হয়েছে। যেমন সিলেটে নির্বাচক মঞ্জু ভাই কাজ করেছেন, উনি একজন পেস বোলার ছিলেন। উনি আমাদের পেসারদের নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করেছেন। এখানে আসার পর ব্যাটিং কোচ আছেন শানু স্যার, স্পিন কোচ ওয়াহিদ গনি স্যার আছেন। সুতরাং বলা যায় আমরা মোটামুটি পরিকল্পনা মোতাবেক ভালোই চলছে।’

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password