গভীর নিম্নচাপে চলছে বর্ষণ, হতে পারে জলোচ্ছ্বাস

গভীর নিম্নচাপে চলছে বর্ষণ, হতে পারে জলোচ্ছ্বাস

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপের রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে চলছে ভারি বর্ষণ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এর প্রভাবে উপকূলের নিচু এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।এদিকে, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল রয়েছে। ফলে দেশের সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।

আজ শুক্রবার সকালে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি সকাল ৬টায় কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম- দক্ষিণ পশ্চিমে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার পশ্চিম- দক্ষিণ পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এ সময় নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল বলে বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়।আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, নিম্নচাপটি আরো উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সতর্ক বার্তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সাগরে বিচরণ না করে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মাদারীপুর, যাশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও সিলেট এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে হয়েছে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা ৯টা থেকে বিকাল ৩টা মধ্যে বায়ুচক্রটি নিম্নচাপ আকারেই পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় সুন্দরবনের ওপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির পর বুধবার রাতে তা সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সেটি আরো ঘনীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপে রূপ নেয় এবং এদিন দুপুরের পর সেটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়।

এদিকে, লঘুচাপ সৃষ্টির পর বুধবার রাত থেকে ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃষ্টির এই প্রবণতা আগামী দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে।পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ২৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঢাকায় রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

আবহাওয়ার শুক্রবারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিম্নচাপের প্রভাবে বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারি (৮৯ মিলিমিটার বা তার বেশি) বর্ষণ হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, খুলনা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, বাগেরহাট, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল এবং দ্বীপ ও চরগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password