ইংল্যান্ড সফরে প্রথম জয়ের দেখা পেল পাকিস্তান

ইংল্যান্ড সফরে প্রথম জয়ের দেখা পেল পাকিস্তান

নটিংহামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেট পেয়ে দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই রানের উৎসবে মেতে ছিল। সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যচে দুই দলই করেছে দুইশোর অধিক রান। ইংল্যান্ডের লিভিংস্টোনতো এক ম্যাচেই দেশের হয়ে দুই রেকর্ড নিজের নামে করে নিয়েছেন। ২ রানে জীবন পেয়ে খুনে ইনিংসে গড়লেন দেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটি ও সেঞ্চুরির রেকর্ড। কিন্ত ম্যাচে শেষ হাসি ইংল্যান্ডে সফরে ধুকতে থাকা পাকিস্তানের। আইসোলেশন শেষে নটিংহামে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই মাঠে নেমেছিল ইংল্যান্ড। তাতেও লাভ হয়নি স্বাগতিকদের। নটিংহ্যামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩১ রানে জিতে ইনল্যান্ড সফরে প্রথম জয়ের দেখা পেল পাকিস্তান।

২৩৩ রানের বিশাল রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ডেভিড মালানের উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ওয়ানোডে সিরিজের মতো টি-টুয়েন্টি সিরিজেও রান খরায় ভুগছেন ইংল্যান্ডের এই টপ অর্ডার। আউট হয়েছেন মাত্র ১ রান করেই। এরপর ক্রিজে এসে টিকতে পারেননি বেয়াস্ট্রো (১১) ও মঈন আলী (১)। মাত্র ৪৮ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। এক প্রান্তে উইকেট হারাতে থাকলেও অপর প্রান্তে ঝড় তোলেন জেসন রয়। তিন ছক্কা ও দুই চারে ১৩ বলে ৩২ রান করা রয়কে থামান শাদাব খান। হারিস রউফের বলে ২ রানে মোহাম্মদ হাসনাইনকে ক্যাচ দিয়েও ছক্কা পেয়ে যান লিভিংস্টোন। তারপর থেকে এই অলরাউন্ডারের তাণ্ডব বয়ে গেছে সফরকারীদের উপর দিয়ে। দলীয় ৮২ রানের মাথায় জেসন রয়ের বিদায়ের পরও তান্ডব চালিয়ে যেতে থাকেন লিভিংস্টোন। ১৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন লিভিংস্টোন। ইংল্যান্ডের হয়ে আগের দ্রুততম ফিফটি ছিল মর্গ্যানের। ২০১৯ সালে নেপিয়ারে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ফিফটি করেন ২১ বলে। ইংল্যান্ডর হয়ে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম ফিফটি করে ক্ষান্ত হননি তিনি।

৪২ বলে সেঞ্চুরী করে একই ম্যাচে দেশের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরীর রেকর্ডটিও নিজের নামে করে নিয়েছেন তিনি। এর আগে ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরী ছিল্ল ডেভিড মালানের। নেপিয়ারের ওই ম্যাচেই ৪৮ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন এই বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। তবে তাকে কেউ ভাল সঙ্গ দিতে পারেনি কোন ব্যাটসম্যান। এক ছক্কায় ১৬ রান করে ফিরেন মর্গ্যান। ১১ বলে কোনো বাউন্ডারি ছাড়া ১০ রান করেন লুইস গ্রেগরি। দলীয় ১৮৩ রানের সময় ব্যাক্তিগত ১০৩ রান করে লিভিংস্টোন বিদায় নিলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ইংল্যান্ড। শেষের দিকে ১৬ রানের ইনিংস ব্যবধান কিছুটা কমান ডেভিড উইলি। ইনিংসের ৫ বল বাকি থাকতে ২০১ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের শাহীন শাহ আফ্রিদী ও শাবাদ খান ৩টি করে উইকেট শিকার করেন।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানকে দারুণ সূচনা এনে দেন বাবর ও রিজওয়ান। পাওয়ার প্লেতে অতোটা বিস্ফোরক ছিলেন না দুই ব্যাটসম্যান। প্রথম ৬ ওভারে আসে ৪৯ রান। এরপর তারা মনোযোগ দেন রানের গতি বাড়ানোর দিকে। ইনিংসের সপ্তম ওভারে ৫০ রান পূর্ণ করা পাকিস্তান ১১.২ বলেই স্কোর বোর্ডে জমা করে ১০০ রান। ৩৪ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন রিজওয়ান, এর আগেই ৩৫ বলে ফিফটি হয়ে যায় বাবরের। ৮৭ বলে জুটির রান দেড়শ হতেই ফিরেন রিজওয়ান। এই কিপার-ব্যাটসম্যানের ৪১ বলে খেলা ৬৩ রানের ইনিংস গড়া আট চার ও এক ছক্কায়। সঙ্গীকে হারিয়ে বেশিক্ষন টিকতে পারেননি পাকিস্তানি অধিনায়ক।

সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ৮৫ রানে থামেন বাবর। তার ৪৯ বলের অধিনায়কোচিত ইনিংস সাজানো তিন ছক্কা ও আট চারে। শেষদিকে ঝড় তোলেন শোয়েব মাকসুদ (১৯), ফখর জামান (২৬) ও অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ (২৪)। এই তিন ব্যাটসম্যান মিলে মাত্র ২৫ বলে করেছেন ৬৯ রান। সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর ছিলেন ফখর জামান। ফখর ২৬ রান করতে খেলেছেন মাত্র ৮৮ বল। শেষ পর্যন্ত নির্ধারীত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৩২ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের টম কুরাণ ২ উইকেট লাভ করেন। আগামী রোববার লিডসে হবে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password