অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে চলমান টানাপোড়েন নিয়ে মুখ খুলেছেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তিনি সাকিবের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন।মাশরাফির মতে, বিসিবির কর্মকর্তাদের ব্যর্থতায় সাকিবের বিষয়টি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গেছে। এ ছাড়া বিসিবি প্রেসিডেন্ট হওয়া নিয়ে সাকিব যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে কোনো দোষ দেখছেন না মাশরাফি।
বুধবার একটি ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিবের একটি বক্তব্য ঘিরে বিসিবির সঙ্গে চলমান দূরত্ব নিয়ে খোলামেলা এমন অভিমত প্রকাশ করেন মাশরাফি।
ফেসবুক লাইভে সাকিবের বলা কোন কথাগুলোকে যৌক্তিক মনে হয়েছে, এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বলেন, ‘এটি খুবই সাধারণ বিষয় যে একজন ক্রিকেটার অবসরে গেলে বিসিবির সভাপতির শীর্ষ পদে আসীন হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করতেই পারেন। সেরা সভাপতি হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করতেই পারেন। এর মধ্যে বিতর্ক হওয়ার মতো কোনোরকম কারণ দেখছি না আমি। সাকিব বিসিবি সভাপতি হতে চাইতেই পারে। যে কোনো ক্রিকেটারই বলতে পারে এটি।’
সাকিবের এমন বক্তব্য নিয়ে টানাহ্যাঁচড়া চলছে বলেও মন্তব্য মাশরাফির।বিসিবি-সাকিব দ্বন্দ্বের বিষয়ে মাশরাফির প্রশ্ন— ‘সাকিব কেন বারবার বোর্ডের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছেন? আর বোর্ড-ই বা কেন সাকিবের প্রতিপক্ষ হয়ে যাচ্ছে বারবার?’
এর পেছনে একটি কারণকে দায়ী করেন মাশরাফি। তার মতে, শ্রীলংকা সফরে না গিয়ে আইপিএল খেলতে চাওয়া নিয়ে সাকিবের আবেদনের বিষয়ে বোর্ড অপেশাদার আচরণ করেছে তার সঙ্গে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সফল এ অধিনায়ক বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডকে দেওয়া সাকিবের চিঠি কেন গণমাধ্যমে এলো? সাকিব তো এই চিঠি ফাঁস করেনি বা তার সোশ্যাল মিডিয়া পেজে আপলোড করেননি। তা হলে নিশ্চয়ই বোর্ডের ভেতর থেকে বিষয়টি প্রকাশ হয়েছে। এটি কি কোনো বোর্ডের পেশাদারিত্ব প্রকাশ পাচ্ছে?’
বোর্ডের কর্মকর্তারা সাকিবের চিঠির ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে মত মাশরাফির। ‘সাকিব বলেছে— শ্রীলংকা সিরিজ খেলবে না। চিঠির কোথাও তো সে লেখেনি যে, টেস্ট খেলবে না। তবে কেন গণমাধ্যমে এসে আকরাম ভাই বা যে কেউ এসে বলবেন যে, সাকিব টেস্ট খেলতে চান না? চিঠির মতো এত কনফিডেন্সিয়াল বিষয় কেন গণমাধ্যমে আসবে?’
শুধু এই বিষয়েই বোর্ড ও সাকিবের মাঝে রেষারেষি চলছে বলে মন্তব্য মাশরাফির।তার ধারণা— অজ্ঞাত কারণে নির্দিষ্ট কোনো ক্রিকেটারকে নিয়ে বিতর্কে সৃষ্টি করছেন বিসিবির কিছু কর্মকর্তা। তারা কারা সেটি তিনি জানেন না। কী কারণে তারা এসব করছেন তাও জানেন না মাশরাফি।
‘কিন্তু ইতিহাস ঘাটলে দেখবেন— এমনটি এর আগেও হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে— এখন সাকিবের মতো খেলোয়াড়কে নিয়েও এসব চলছে’-যোগ করেন মাশরাফি।বিসিবির কর্মকর্তাদের প্রতি খেলোয়াড়দের সম্মান ও আস্থা কমে যাওয়ার কারণেও এসব বিতর্ক হয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করেন সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক।
প্রসঙ্গত গত কয়েক দিন সাকিব আলোচনায় ছিলেন একটি সাক্ষাৎকারকে ঘিরে। ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকফ্রেঞ্জির আয়োজনে ফেসবুকে একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে গত শনিবার সাকিব বিসিবির বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ তোলেন। কাঠগড়ায় দাঁড় করান বিসিবি পরিচালক ও দেশের সাবেক দুই অধিনায়ক আকরাম খান ও নাঈমুর রহমানকে।সাকিবের কথার সমর্থনে কথা বলেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। তিনিও বিসিবিকর্তাদের খবরদারি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন