নরসিংদীতে ধর্ষণের শিকার শারীরিক প্রতিবন্ধী জন্ম দিল কন্যা সন্তান

নরসিংদীতে ধর্ষণের শিকার শারীরিক প্রতিবন্ধী জন্ম দিল কন্যা সন্তান

নরসিংদীর জেলার মনোহরদী উপজেলার চালাকচর ইউনিয়ন এর হাফিজপুর গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে ফাহিমা(১৮) শারীরিক প্রতিবন্ধী কে ধর্ষণ করে একই এলাকায় বাসিন্দা বাচ্ছু মিয়ার ছেলে আল-আমিন(১৬) ও রতন মিয়ার ছেলে নাঈম (১৯) । ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ফ্রেরুয়ারী মাসে প্রতিদিনের মত প্রতিবন্ধী মেয়ে ফাহিমা (১৮), ছাগল নিয়ে মাঠে ঘাস খাওয়াতে যায়, দূর থেকে মোঃ আলামিন (১৬) ফাহিমাকে একা দেখতে পেয়ে রায়হান মিয়ার মুরগীর ফার্মের পাশে প্রতিবন্ধি মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে, এটি নাঈম মিয়া(১৮) দেখতে পেয়ে আবার পূনরায় ধর্ষণ করে। একই দিনে দুটি ছেলের ধারা ধর্ষণের স্বীকার হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়েটি।

প্রায় তিন মাস পর প্রতিবন্ধী মেয়ে ফাহিমা (১৮) এর শারিরীক পরিবর্তন দেখতে তার মা জিজ্ঞেস করলে, পুরো ঘটনায় বিবরন দেন মেয়েটি। ধর্ষিত প্রতিবন্ধী মেয়ে ফাহিমার পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বিচার দাবি করেন, কিন্তু পরিবারের সদস্যরা করো কাছেই বিচার পায়নি অসহায় গরীব হওয়াতে। এমনকি মনোহরদী থানায় গেলেও কোন অভিযোগ নেওয়া হয়নি ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ধর্ষিত ফাহিমা (১৮) পরিবারের সদস্যরা মনোহরদী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিলের ধারস্থ হন এবং তাদের মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়ে ৭ মাসের অন্তসস্তা হয়েও কারো কাছে গিয়েও বিচার পাচ্ছেন না বিষয়টি খুলে বলেন। সাংবাদিক সাকিল, মনোহরদী থানায় অফিসার ইনচার্জ, ডিওটি অফিসার,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( সার্কেল) এর সাথে কথা বলে, প্রতিবন্ধী ফাহিমার পরিবারকে থানায় পাঠায় এবং ধর্ষিত ফাহিমার ভাই, দেলোয়ার হোসেন (২৫) বাদী হয়ে, একই গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আলামিন (১৬) ও নাঈম (১৯) দুটি ছেলের নামে মামলা দায়ের করেন। এবং মনোহরদী থানায় পুলিশ এই দুজন আসামীকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করেন।

এই দুই আসামী আলামিন (১৬) ও নাঈম (১৯) উভয়েই ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেন। এবং উভয়কে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। একই বছরের ২০২০ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে ধর্ষিত প্রতিবন্ধী মেয়ে ফাহিমার(১৮) সিজারিয়ান অপারেশনের তারিখ নির্ধারণ করা হয় এবং ঐ সময়ও টাকার অভাবে অপারেশন করাতে পার ছিলোনা মেয়েটির পরিবার। তা জানতে পেরে সাংবাদিক সাকিল নিজ অর্থায়নে মনোহরদী সেন্টাল হাসপাতালে মেয়েটির সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ডেলিভারি করেন এবং একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয় এর ধর্ষিত শারীরিক প্রতিবন্ধীর।

পরবর্তীতে ধর্ষিত শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে ফাহিমা (১৮) ও তার সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চা সহ, আসামী ধর্ষক আলামিন(১৬) ও নাঈম (১৯) কে ডিএনএ টেস্টের জন্যে ফরেনসিক ডি.এন.এ ল্যাবরেটরি অব বাংলাদেশ পুলিশ, ঢাকায় পাঠানো হয়। এবং ডি.এন.এ টেস্টে সুদৃঢ় ভাবে প্রমানিত হয় যে, প্রথম ধর্ষক ও আসামী আলামিন (১৬) ফাহিমার (১৮) গর্ভজাত নবজাতক কন্যা সন্তানের জৈবিক পিতা।

এবং আসামী আলামিন (১৬) দোষী প্রমানিত হন।

পরবর্তীতে আলামিন (১৬) পরিবার, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আলামিনের জন্ম সনদের বয়স পরিবর্তন করে ১০ বছর করে আনেন। যেখানে আলামিন (১৬) ছোট বোন শারমিন বয়স ১২।

সে হাফিজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী। বর্তমানে ধর্ষনের দায়ে অভিযুক্ত উভয় আসামী আলামিন ও নাঈম জামিনে মুক্ত রয়েছে।

জালিয়াতির মাধ্যমে বয়স পরিবর্তন করে আলামিনের(১৬) বয়স দশ বছর দিয়ে তৈরী করা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে নাবালক পরিচয়ে আদালত থেকে জামিন নেয় আলামিন (১৬)।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শারীরিক প্রতিবন্ধী ফাহিমা(১৮) বাবা বলেন, আমরা কারো কাছে গিয়ে সঠিক বিচার পাইনি দুঃস্থ গরীব বলে। গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password