ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় জমা পড়েছে দেড় কোটি টাকা

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় জমা পড়েছে দেড় কোটি টাকা

ষষ্ঠ দিনে বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় জমা পড়েছে দেড় কোটি টাকা। এর মধ্যে নগদ বিশ লাখ টাকা দান করে অনন্য নজির গড়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা। একই সাথে চালু ছিলো ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির কাজ। তবে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে নাম তালিকাভুক্ত করতে ভোগান্তির অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য গড়ে তোলা সহায়তা তহবিলে টাকা দিচ্ছেন বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা ও ব্যক্তিরা। এছাড়া এই ঘটনায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্টিরাও। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য রবিবার (৯ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেড় কোটি টাকা সহায়তার টাকা জমা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ঘুরে দাঁড়াতে ব্যবসায়ী নেতারা আরও সহায়তার আশা করছেন। রবিবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ঘটনাস্থলে এসে ১০ লাখ টাকা সহায়তা দেন। পরে তার নেতৃত্বে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ৫ লাখ টাকা, প্যানেল মেয়র এক লাখ টাকা ও কুমিল্লা ব্যবসায়ী সমিতি ১০ লাখ টাকাসহ মোট ২৬ লাখ টাকা সহায়তা দেন। এসময় আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম ১০ লাখ টাকা দেবো। কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদককে অনুরোধ করেছিলাম তোমরাও ১০ লাখ টাকা দাও।

কুমিল্লা সিটিকরপোরেশনের মেয়রকে বললাম তুমিও ৫ লাখ টাকা দাও। আমরা ২৫ লাখ টাকা তাৎক্ষণিত ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমাদের প্যানেল মেয়রও এক লাখ টাকা দিয়েছেন। আমরা ২৫ লাখ টাকার কথা বললেও ২৬ লাখ টাকা হস্তান্তর করেছি। পরে দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে ২৬ লাখ টাকা সহায়তা দেন।

এসময় তিনি বলেন, নিজেদের একদিনের বেতন ও ইফতারের খরচ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের অফিসার্স ও কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার জন্য সদর দফতারের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একদিনের বেতন ও ইফতারের খরচের দুই লাখ টাকা তুলে দিয়েছি। আমরা যে তাদের পাশে আছি এ জন্য এটি একটি প্রতীকী অংশগ্রহণ। এখানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো যেন ভালোভাবে ঈদের আনন্দ করতে পারে।

এই অনুদান বিতরণ করার বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, তালিকা করার বিষয়ে বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতিকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারা দেখভাল করছেন। তবে কোনও ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে যারা সদস্য তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন কে থাকবে, কে থাকবে না। এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৯০০ ব্যবসায়ীর তালিকা সম্পূর্ণ করা হয়েছে। তালিকায় ব্যবসায়ীদের রাখা দরকার। কারণ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এখন ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে শতভাগ ব্যবসায়ীদের তালিকা হওয়া প্রয়োজন। তারপর এখানে যারা ভবন মালিক যারা আছেন, তারা কে কী পাবে, কীভাবে বরাদ্দ পাবেন সেটা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র দেখবেন। কারণ এই মার্কেটের মালিক তো ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রথম কোনও সংসদ সদস্য ২৫ লাখ টাকার চেক আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আমরা এই টাকা আজই ব্যাংকে জমা করবো। এটা অবশ্যই উপকারে আসবে । আমরা তার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তার এই টাকা দেওয়ার মাধ্যমে ঈদ যাত্রা শুরু হলো। বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সহয়তার জন্য আইএফআইসি ব্যাংকে বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সহয়তা তহবিল নামে একটি সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর (অ্যাকাউন্ট) খোলা হয়েছে। সহায়তার সব অর্থ এই হিসাব নম্বরে জমা হবে, পরে ব্যবসায়ীদের মাঝে সেটা বিতরণ করা হবে।

এছাড়া, আলেয়া হিজড়া ব্যক্তিগতভাবে ২ লাখ টাকা, কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার নেতৃত্বে ২৬ লাখ টাকা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ও ইফতারের খরচের ২ লাখ টাকা ও তৃতীয় লিঙ্গে জনগোষ্ঠী (হিজড়া) দিয়েছেন ২০ লাখ টাকা সহায়তা তহবিলে জমা দিয়েছেন। এছাড়া ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এক কোটি টাকার অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password