প্রতি বছর ঢাকায় নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর, ভূমি ধসের আশঙ্কা

প্রতি বছর ঢাকায় নামছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর, ভূমি ধসের আশঙ্কা

ক্রমেই নিচে নামছে দেশের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর। প্রতি বছর যে হারে ঢাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে, তাতে যে কোনো সময় ঢাকায় ভূমি ধসের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, পানি উত্তোলন ও নগরায়ণের কারণে বৃষ্টির পানি ভূগর্ভে যেতে না পারায় প্রতি বছর পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে দুই থেকে তিন মিটার করে, যা ৯ থেকে দশ ফিটের মতো।

ভূগর্ভের পানির ব্যবহার এখনই কমানোর উদ্যোগ নেয়া না গেলে অল্পদিনের মধ্যেই সুপেয় পানির সংকট দেখা খোদ রাজধানীতেই, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, একসময় না একসময় ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার থেকে সরে আসতেই হবে। পদ্মা কিংবা মেঘনা নয়, দখল-দূষণমুক্ত করা গেলে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোই হতে পারে পানির অন্যতম উৎস। নাগালের মধ্যে থাকবে পানির দামও। তবে উদ্যোগ নিতে হবে সংকট তীব্র হওয়ার আগেই।

বাড়ছে নগরায়ণ, বাড়ছে তাপমাত্রা, সেই সাথে বাড়ছে পানির চাহিদা। ঢাকার পানির চাহিদা এখন ২১০ থেকে ২৬০ কোটি লিটার। উৎপাদন ক্ষমতা আছে ২৮০ কোটি লিটার। ঢাকার পানি সরবরাহের ৬৬ শতাংশ ভূগর্ভস্থ উৎস থেকে মেটাতে হচ্ছে ঢাকা ওয়াসাকে। আর বাকী ৩৪ শতাংশ পানির চাহিদা মেটাতে হয় নদীর পানির পরিশোধন করে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ গবেষণা বলছে, ১৯৯৬ সালে ঢাকায় পানির স্তর ছিল ২৫ মিটার নিচে, যা ২০০৫ সালে নেমে গেছে ৪৫ মিটারে, ২০১১ সালে ৬০ মিটার এবং ২০২৩ সালে ৭৫ মিটার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১০-১২ বছর পর এটা ১৩২ মিটারে নেমে যেতে পারে। তবে পানির চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ পানির উৎসের ওপর নির্ভরতা কমাতে চায় ঢাকা ওয়াসা।

সেজন্য ২০২৯ সাল নাগাদ ৬৭ শতাংশ পানির চাহিদা মেটাতে নদীর পানির ওপর নির্ভর করতে চায় সংস্থাটি। ভূগর্ভস্থ পানির উৎস হতে চাহিদা মেটানো হবে ৩৩ শতাংশ। সেজন্য পদ্মা মেঘনা নদীর পানি পরিশোধন করে সরবরাহে জোর দিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। নেয়া হয়েছে প্রকল্প। ঢাকার চারপাশের নদীরগুলোর দূষণের মাত্রা বেশি থাকায় পরিশোধন করা সম্ভব নয় বলেই পদ্মা ও মেঘনা নদী থেকে পানি আনতে হচ্ছে। যা অনেকটাই ব্যয় বহুল।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password