ফরিদপুরে বেসরকারি ক্লিনিকে সিজার করতে গিয়ে বাচ্চার পেট কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। আশঙ্কজনক অবস্থায় নবজাতকটিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
ফরিদপুরে সিজারিয়ান অপারেশন করার সময় নবজাতকের পেট কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এক গাইনি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। পরে ওই শিশুটিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। জানা যায়, শহরের চর কমলাপুর এলাকার বাসিন্দা নায়েব আলীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুরশিদা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে শনিবার (২২ জুন) বিকেলে বেসরকারি হাসপাতাল সৌদি বাংলায় ভর্তি করেন।
পরে সেখানকার গাইনি চিকিৎসক ডা. শিরীন আক্তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মুরশিদা বেগম। নবজাতককে তুলে দেয়া হয় বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের হাতে। কিছু সময় পর তারা দেখতে পান নবজাতকের নাভির পাশ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে তারা প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। পরে রক্তক্ষরণ বেশি হলে ওই চিকিৎসককে খবর দেয়া হলে তিনি এসে নাভির পাশে কেটে ফেলা অংশে সেলাই করে দেন।
এরপর ওই শিশুটিকে রাতেই ডা. জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রোববার (২৩ জুন) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে ওই শিশুটি হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নবজাতকের বাবা নায়েব আলী বলেন, ‘আমার হাতে আমার সন্তানকে তুলে দেয়। কিছু সময় পর দেখতে পাই নাভির পাশ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। নাভির পাশে বেশ খানিকটা কাটা। শরীর নীল হয়ে যাচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে তারা প্রথমে কোনো গুরুত্ব দেয়নি।’
তিনি আরো বলেন, রাতেই শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাই, সেখানকার চিকিৎসকরা ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না। তাই ঢাকায় না নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আমার প্রথম সন্তান, কোনোভাবেই এটা মেনে নিতে পারছি না।
সৌদি বাংলা হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ডা. শিরীন আক্তার জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এটি। অপারেশন করার সময় দেখতে পাই নবজাতকের অবস্থান ঠিক জায়গায় ছিল না। অবস্থা বিবেচনায় পরে কাটা অংশ সেলাই করে দেয়া হয়।
সৌদি বাংলা হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম লিখন বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে শিশুটির খোঁজখবর নিয়েছি। ওই শিশুটিকে সুস্থ করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক শামীম হাসান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম, শিশুটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. এ এস এম পারভেজ জানান, শিশুটিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে ৭২ ঘণ্টার আগে কিছু বলা যাবে না।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন