দেশে প্রতি বছর স্তন ক্যান্সারে মৃত্যু ৭ হাজার, জরায়ু ক্যান্সারে ৫

দেশে প্রতি বছর স্তন ক্যান্সারে মৃত্যু ৭ হাজার, জরায়ু ক্যান্সারে ৫
MostPlay

দেশে প্রতি বছর স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন প্রায় ১৩ হাজার নারী। এর মধ্যে মারা যায় প্রায় ৭ হাজার। জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন ৮ হাজার, এর মধ্যে ৫ হাজার মারা যান। এ ছাড়া শনাক্তের বাইরে থাকেন অসংখ্য নারী। বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্টানিং এবং প্রতিরোধ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।

জাতীয় জরায়ু-মুখ ওস্তন ক্যান্সার নির্ণয় ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা জানান, কর্মসূচির অধীনে গত পাঁচ বছরে (২০১৭ -২০২২) সাল পর্যন্ত ২৪ লক্ষ মহিলার স্ক্রিনিং করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ অর্থাৎ ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৫৪ জনের ভায়া (জরায়ু মুখ ক্যান্সার) পজিটিভ ছিল। আর ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ অর্থাৎ ৩২ হাজার ২৩৪ জনের সিবিই (স্তন ক্যান্সার) পজিটিভ ছিল।

ভায়া পজিটিভ মহিলাদের মধ্যে ৪৯ হাজার ৯৫৩ জনের কল্পোসকপি, ১২ হাজার ৯৪৪ জনের হিস্টোপ্যাথলজি করা হয়েছে এবং ২০ হাজার ৩০ জনের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের মহিলাদের জরায়ু মুখ ও স্তন ক্যান্সারের হার সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা জানান, ২০১২ সালে স্তন ক্যান্সারের হার ছিল ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০২২ সালে কমে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। হ্রাস পেয়েছে ৪.৯ শতাংশ।

একই সময়ে জরায়ু মুখ স্তন ক্যান্সারের হার ১৯.৩ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে অর্থাত ৭.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০১২ সালে ৬২ হাজার ১৯ জনের স্ক্রিনিং করে ১৪ হাজার ৮৩৬ জনের (২৩.৯ শতাংশ) সিবিই পজিটিভ পাওয়া যায় এবং ১১ হাজার ৯৫৬ জনের (১৯.৩ শতাংশ) ভায়া পজিটিভ পাওয়া যায়। ২০২২ সালে ৬৮ হাজার ৭ শত জনের স্ক্রিনিং করে ১৩ হাজার ২৮ জনের (১৯ শতাংশ) সিবিই পজিটিভ পাওয়া যায় এবং ৮ হাজার ২৬৮ জনের (১২ শতাংশ) ভায়া পজিটিভ পাওয়া যায়।

তিনি আরো জানান, এই কর্মসূচির অধীনে স্ক্রিনিং করার জন্য ইতোমধ্যে ৭ লক্ষ মহিলাকে প্রি-রেজিস্ট্রেশনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে বর্তমানে ১৫ থেকে ১৮ লাখ ক্যানসার রোগী বাংলাদেশে রয়েছে। এর মধ্যে প্রতিবছর মৃত্যু হয় ১ লাখের বেশি মানুষের। আর নতুন করে আক্রান্ত হয় দেড় লাখ মানুষ। অনিয়ন্ত্রিত জীবন ব্যবস্থার জন্য ক্যান্সার, কিডনি, হার্টের রোগ ডায়াবেটিস বেড়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই রোগগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব যদি আমরা প্রথমেই সচেতন হই।

এই রোগগুলো কেন হয় এবং কিভাবে আমরা এর চিকিৎসা নেব এ বিষয়ে সারা দেশের মানুষকে অবহিত করা প্রয়োজন। ঢাকাসহ ৫০ জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। মশা নিধনে সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু চিকিৎসার মাধ্যমে ডেঙ্গু মোকাবিলা সম্ভব নয়। এ জন্য একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও আরো সচেতন হতে হবে।

বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব রাশেদা আকতার, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদ প্রমুখ।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password