খুলনায় বিএনপির সমাবেশ শুরু

খুলনায় বিএনপির সমাবেশ শুরু
MostPlay

খুলনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সমাবেশ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর ১টার দিকে দলটির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ শুরু হয়। খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ সফল করতে সমাবেশস্থল ও এর আশেপাশে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এ ছাড়া শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করতে ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। থাকবে ড্রোন ক্যামেরার নজরদারি।

তিনি বলেন, শুক্রবার রাতেই সম্পন্ন হয় মঞ্চ তৈরির কাজ। আটটি পয়েন্টে বসানো হয়েছে প্রজেক্টর। সমাবেশ মঞ্চ থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১২০টি মাইক টানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক মন্ত্রী আবদুল মঈন খান, খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও খুলনার গণসমাবেশের প্রধান উপদেষ্টা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখবেন। এদিকে শনিবার ভোর থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দলটির হাজারো নেতাকর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ অভিমুখে রওনা হয়েছেন। নেতাকর্মীদের মিছিল স্লোগানে মুখর হয়ে উঠেছে দলীয় কার্যালয়সহ আশেপাশের এলাকা।

সমাবেশ সফল করতে দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ট্রাক, মাইক্রোবাস, ট্রেন ও নৌকায় করে খুলনায় পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে। গণসমাবেশে যোগ দিতে শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাতে খুলনা শহরের সোনালী ব্যাংক চত্বরে পৌঁছান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। এদিকে, বিএনপির নেতারা বলছেন, সমাবেশে যেতে অনেক বাস ও মাইক্রোবাসের ভাড়া করা হয়েছিল।

কিন্তু হঠাৎ করে বাস মালিকরা অগ্রিম যে টাকা নিয়েছিল, তা ফেরত দিচ্ছেন। এসব করে গণসমাবেশ প্রতিহত করতে পারবেন না। অনেকে আগেই খুলনায় পৌঁছে গেছে। বাকিরাও বিকল্প উপায়ে পৌঁছে যাবে। এদিকে শুক্রবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে বালিশ-কাঁথা নিয়ে অবস্থান করেছেন দলটির হাজারো কর্মী-সমর্থক। অপরদিকে বিএনপির সমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার বড় শোডাউন করে রাজপথে সন্ত্রাস নৈরাজ্য হলে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। ফলে সামবেশ ঘিরে টান টান উত্তেজনা রয়েছে।

তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দলের নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশে বিভাগীয় পর্যায়ে গণসমাবেশ শুরু করেছে বিএনপি। ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশের পর ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে সমাবেশ হয়েছে। ২২ অক্টোবর খুলনার পর ২৯ অক্টোবর রংপুরে সমাবেশ হওয়ার কথা।

এরপর ৫ নভেম্বর বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে, ১৯ নভেম্বর সিলেটে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায়, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ হবে। এদিকে খুলনা জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি’ বুধবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সড়ক ও মহাসড়কে অবৈধভাবে নছিমন, করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিআরটিসির গাড়ি চলাচল করছে।

আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন যদি সড়কে ওই অবৈধ যান চলাচল ও কাউন্টার বন্ধ না করে, তাহলে পরবর্তী দুই দিন ২১ ও ২২ অক্টোবর মালিক সমিতির সব রুটের গাড়ি বন্ধ থাকবে। খুলনার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণার পর কোনো প্রতিবন্ধকতাই বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশের জনস্রোতকে রুখতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি দলের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো প্রতিবন্ধকতা, কোনো হরতাল মানব না, আমরা কোনো কারফিউও মানব না, আমরা সেখানে উপস্থিত হবই। প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, নির্বাচনকালীন সরকার, জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নেতাকর্মী হত্যা, হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে গণসমাবেশের কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহের পর আজ খুলনা বিভাগীয় শহরে দলটির তৃতীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password