অবশেষে ফলোঅন এড়াতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। অক্ষুণ্ন রেখেছে ঘরের মাঠে গত এক দশকের রেকর্ড। লজ্জার ইতিহাস লিখতে দিল না লিটন দাস ও মিরাজের ব্যাট।যদিও কাজটা কিছুটা এগিয়ে রেখে গেছেন মুশফিকুর রহিম। ৯৫ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে ফলোঅন এড়ানোর শঙ্কা রেখে মাঠ ছাড়েন। এর আগে মিঠুনের সঙ্গে গড়ে গেছেন ৭২ রানের জুটি।
তবে কর্নওয়ালের বলে আত্মহুতি দিয়ে ফলোঅন এড়ানোর ৪৩ রান আগেই সাজঘরে ফেরেন মুশফিক। মি. ডিপেন্ডেবলের বিদায়ের পর দেখেশুনে এগিয়ে যান লিটন ও মিরাজ।ইতোমধ্যে ৬০ রানের জুটি গড়েছেন। তার আর এ জুটির দৃঢ়তায় ফলোঅন এড়ালো বাংলাদেশ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেট খুঁইয়ে ২১৬ রান।
৮৫ বল মোকাবিলা করে ৪০ রানে অপরাজিত লিটন দাস ও ৭৪ বল খেলে ৩২ রানে অপরাজিত মিরাজ।প্রথম পরিকল্পনা সফলের পর এখন বাংলাদেশের লক্ষ্য উইন্ডিজের করা ৪০৯ রানের কত কাছাকাছি নিয়ে ঠেকানো যায়। আর এ গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে লিটন-মিরাজ জুটিকেই।
কারণ তাদের পর দলের কেউ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান নয়। লেজেদিকের তিনজনের মধ্যে কেবল তাইজুল কিছুটা ব্যাট চালাতে জানেন।বাংলাদেশ দলের এমন সংকটময় অবস্থা সকালের সেশনে কল্পনা করা যায়নি। দিনের শুরুটা ছিল বাংলাদেশের জন্য দারুণ আশা জাগানিয়া।
ফরোয়ার্ড শর্ট লেগ ও লেগ গালি রেখে শর্ট বল করার কৌশল নিয়ে শুরু করেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। তা কাজে লাগেনি। উল্টো নো বল করেন তিনটি।তাকে ভালোই মোকাবিলা করেছেন মুশফিক ও মিঠুন। অপরপ্রান্ত থেকে বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানও সুবিধা করতে পারেননি। সে সময় অনায়াসে রান নিতে থাকেন মুশফিক। প্রথম সেশনে ৭৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। তবে উইকেট হারাতে হয়েছে ২টি। তাও ব্যাটসম্যানের বদান্যতায়। দুটি উইকেটই গেছে রাহকিম কর্নওয়ালের ঝুলিতে।
পঞ্চম উইকেটে মুশফিক-মিঠুনের জুটি ছিল ১৮১ বলে ৭২ রানের।২৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা মুশফিক ৮৯ বলে ক্যারিয়ারের ২২তম ফিফটি করেন। কিন্তু ফিফটির পরই রানের নেশা চেপে বসে তার। কর্নওয়ালের নিরীহ এক বলে রিভার্স সুইপ করে কাভারে মেয়ার্সের হাতে ধরা পড়েন।
সকাল থেকে মুশফিককে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন দ্বিতীয় টেস্টে জায়গা পাওয়া মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন।কিন্তু মুশফিকের ফিফটির পর পরই আউট হলে গেলেন তিনি। তৃতীয় দিনে স্পিনার রাহকিম কর্নওয়ালের প্রথম শিকারে পরিণত হলেন মিঠুন।
কর্নওয়ালের ঘূর্ণিবলে ব্যাট চালিয়েছিলেন মিঠুন। কিন্তু মিসটাইমিং হয়ে তা ছোট্ট ক্যাচে পরিণত হয়। কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা অধিনায়ক ব্রাথওয়েট দুর্দান্তভাবে তা লুফে নেন।ক্যাচটি নিয়ে সন্দেহ থাকায় রিভিউ নেন মিঠুন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। রিপ্লে দেখার পর থার্ড আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন।
১৫ রানে সমাপ্তি ঘটে মিঠুনের ইনিংসের। ৮৬ বল মোকাবিলা করতে পেরেছেন তিনি।এর আগে গত দুই দিনে বোনার, জসুয়া ও জোসেফের দুর্দান্ত ব্যাটিং দেখেছে ক্রিকেটবিশ্ব। বোনার থেমেছেন ৯০ রানে। এরপর জসুয়ার ৯২ ও জোসেফের ৮২ রানে ভর করে ৪০৯ রানের পাহাড় দাঁড় করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে নেমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। আর একটু পরেই ৪ রান করে ফেরেন ওয়ানডাউনে নামা শান্ত। অধিনায়ক মুমিনুলও নামের সুবিচার করতে পারেননি। তিনি আউট হন ২১ রানে। সতীর্থদের এভাবে বিদায় নিতে দেখে ধৈর্যহারা হয়ে পড়েন তামিম। ব্যক্তিগত ৪৪ রানের মাথায় নিজের উইকেটটিও বিলিয়ে দিয়ে আসেন।
এরপরই ফলোঅনের শঙ্কায় ভুগতে থাকে স্বাগতিকরা। অবশেষে সেই শঙ্কা কাটল।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন