অভিনেত্রী নুসরাত জাহানের ব্যক্তিগত জীবনের টানাপোড়েন এখন সমালোচনার শীর্ষে। খবর ছড়িয়েছে ছয় মাস ধরে নুসরাতের ফ্ল্যাটেই বেশিরভাগ থাকছেন অভিনেতা যশ দাশগুপ্ত। এদিকে গর্ভবতী হয়েছেন নুসরাত। যা নিয়ে স্বামী নিখিলের দাবি, এই সন্তান তার নয়।

এ নিয়ে সবাই যখন নিন্দা ছড়াতেই ব্যাস্ত তখন গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন তসলিমা নাসরিন।

ফেসবুক পোস্টে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘নুসরাতের খবর বেশ চোখে পড়ছে। তিনি অন্তঃসত্ত্বা। তার স্বামী নিখিল এই ব্যাপারে কিছুই জানেন না। দুজন আলাদা থাকছেন ছয় মাস হলো। তবে যশ নামে এক অভিনেতার সঙ্গে অভিনেত্রী নুসরাত প্রেম করছেন। সন্তানের পিতা বলে অনুমান করা হচ্ছে, যশকে। নিখিল নন। খবরটি আদৌ সত্যি না গুজব জানি না। তবে, এই যদি পরিস্থিতি হয়, তাহলে নিখিল আর নুসরাতের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াই কি ভাল নয়? অচল কোনো সম্পর্ক বাদুড়ের মতো ঝুঁলিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না। এতে দুপক্ষেরই অস্বস্তি।’

আরও লিখেছেন, যখন নুসরাত আর নিখিল বিয়ে করলেন, বেশ আনন্দ পেয়েছিলাম। ঠিক যেমন আনন্দ পেয়েছিলাম সৃজিত আর মিথিলার যখন বিয়ে হল। অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি বলেই দুই ধর্মের মানুষের মধ্যে বিয়ে হলে খুব স্বাভাবিক কারণেই পুলকিত হই। জাত-ধর্ম ইত্যাদি দূর করতে হলে ভিন্ন জাত আর ভিন্ন ধর্মের মানুষকে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এতেই হিংসে আর হানাহানিকে হটানো যাবে। কিন্তু এত চোখ জুড়োনো জুটি যে বেশিদিন সুখে থাকবে না কে জানতো!

সেদিন ব্রাত্যর একটি ছবিতে নুসরাতকে দেখলাম। ওটিই নুসরাতের প্রথম কোনও ছবি আমার দেখা। মেয়েটি অনেকটা অ্যানজেলিনা জোলির মতো দেখতে, অভিনয়ও করে বেশ চমৎকার। নিশ্চয়ই মেয়েটি স্বনির্ভর। আসলে স্বনির্ভর এবং সচেতন হলে, আত্মবিশ্বাস এবং আত্মসম্মান যথেষ্ট থাকলে নিজের সন্তানের অভিভাবক নিজেই হওয়া যায়। নিজের সন্তানকে নিজের পরিচয়েই বড় করা যায়। পুরুষের মুখাপেক্ষী হতে হয় না। আসলে নিখিল এবং যশের মধ্যে কী এমন আর পার্থক্য! পুরুষ তো শেষ পর্যন্ত পুরুষই। একজনকে ত্যাগ করে আরেক জনকে বিয়ে করলে খুব যে সুখময় হয়ে ওঠে জীবন তা তো নয়। দ্বিতীয় বিষময় জীবন থেকে বাঁচতে তাহলে কি আবার আরেকটি বিয়ে করতে হবে? তাহলে এ রেসের শেষ হবে না, কাঙ্ক্ষিত পুরুষের দেখাও মিলবে না। স্বাধীনচেতা নারীর কাঙ্ক্ষিত পুরুষ কল্পনায় থাকে, বাস্তবে নয়।'

যশ-নুসরাত-নিখিল এই ত্রিকোণ সম্পর্ক নিয়ে লেখিকা তসলিমা নাসরিন যে আসলে একজন স্বাধীনচেতা নারী হিসেবে নুসরাতের মা হওয়ার সিদ্ধান্তকেই সমর্থন জানিয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এছাড়াও মানুষের জীবনে কোনো ভুল হলে সমাধানের পথে আগানো যাবেনা এমন ধারণাটি অনুচিত।