উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্য নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় তিন উপজেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনসহ সরকারি অফিসে পানি ঢুকে পড়েছে। তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার গতি কিছুটা কমেছে। শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুর ১২টায় যমুনার বাহাদুরাবাদ ঘাটে বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী, চুকাইবাড়ী, বাহাদুরাবাদ ও পৌরসভা, ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী, নোয়ারপাড়া, কুলকান্দি, পাথর্শী, সাপধরী, বেলগাছা, মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া, আদ্রা, মাহমুদপুর, নাংলা, কুলিয়া এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার চর পাকেরদহ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এসব ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলা শহরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের চারদিক এবং আশপাশের বসতবাড়িতেও পানি। রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে গরু ও ছাগল নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অনেকেই।
এ ছাড়া দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ সরকারি অফিসে ঢুকে পড়েছে পানি।। রেলওয়ে স্টেশনের গরু নিয়ে আশ্রয় নেয়া মো. তারা মিয়া বলেন, গত কয়েক দিন থেকে বন্যার পানি ব্যাপক হারে বাড়ছে। আমার বাড়িঘরে পানি। তাই গরু-ছাগল নিয়ে স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছি। প্রথমে স্টেশনে গরু-ছাগল নিয়ে উঠতে দিতে চাইতো না। পরে আবার বলে উঠেছি।
স্টেশনে আশ্রয় নেয়া আবু কালাম বলেন, গতকাল বিকেলে গরু-ছাগল নিয়ে স্টেশনে এসেছি। বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। স্টেশনে গরু-ছাগল নিয়ে খুবই কষ্টে রয়েছি। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৯৩ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে।
তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার গতি কমেছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, বন্যার্তদের সহায়তায় জেলার সাত উপজেলায় ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও তিন হাজার ৪০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন