রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে

রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
MostPlay

আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা দিবস। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। কালো জামা পরে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম করে তাজিয়া মিছিলে অংশ নেয় রাজধানীর শিয়া সম্প্রদায়। পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে এ মিছিল শুরু হয়েছে। এটি যাবে জিগাতলা পর্যন্ত। শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা সাদা ও কালো পোশাক পরে হাতে নানা ধরনের পতাকা নিয়ে মিছিলে যোগ দিয়েছেন। মিছিল উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ইমামবাড়া থেকে ধানমন্ডি লেক পর্যন্ত পাহারা দিচ্ছেন। মিছিলের সঙ্গেও নিরাপত্তা দিচ্ছেন তারা।

মিছিলটি বকশিবাজার, লালবাগ, আজিমপুর ঘুরে জিগাতলা গিয়ে শেষ হবে। তাজিয়া মিছিল শুরুর আগে মহড়া দিয়েছে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন। সরেজমিনে দেখা গেছে, মিছিলে উপস্থিত বেশিরভাগই কালো পাঞ্জাবি পরে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম করছে। বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারও দেখা গেছে মিছিলে। পুরান ঢাকার ধর্মপ্রাণ হাজারো মুসলমান আজ মঙ্গলবার সূর্য ওঠার আগে হোসেনি দালানে হাজির হয়েছেন।

শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সী নারী-পুরুষ আসেন সেখানে। তাদের পরনে কালো কাপড়, মাথায় বাঁধা কালো পতাকা। আর তরুণদের হাতে কালো পতাকা। মহররম মাসের ১০ তারিখ ইসলামের ইতিহাসে ঘটনাবহুল। যা মুসলমানরা আশুরার দিন হিসেবে পালন করে, এদিন বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটেছে বলে কোরআন-হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। মহররমের ১০ তারিখে ইমাম হোসেন (রা.) কারবালার ময়দানে শহীদ হয়েছেন।

মুসলমানদের মধ্যে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন ইমাম হোসেন (রা.) এর শোক স্মরণে রাস্তায় ঘুরে মিছিল বা মাতম করে। এদিন রাজধানীর হোসেনি দালান ইমামবাড়া, বড় কাটারা ইমামবাড়া ও এর আশেপাশের শিয়া সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সতর্কাবস্থানে রয়েছেন। নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন র‌্যাব সদস্যরাও। এবার সুষ্ঠুভাবে তাজিয়া মিছিল সম্পন্ন করতে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি বহন নিষিদ্ধ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

একই সঙ্গে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে পুলিশ ও র‌্যাব। পুরান ঢাকার চকবাজারের বাসিন্দা আসমত আলী। বয়স ৫৫। তিনি বলেন, যখন থেকে বুঝতে শিখি। বড় হয়েই মিছিলে অংশ নেই। আমাদের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে নিহত হন। আমাদের আজ বড় শোকের দিন, দুঃখের দিন, মাতমের দিন।

দিনটি এলেই শোকাতুর হয়ে পড়ি। চকবাজার থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) উদয়ন বিকাশ বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে হোসনি দালান থেকে ধানমন্ডি লেক পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাক, গোয়েন্দা পুলিশ, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ও ডগ স্কোয়াড নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও সোয়াত টিম প্রস্তুত আছে। মিছিলের স্বেচ্ছাসেবীদের শনাক্ত করতে আলাদা আর্ম ব্যাজ ব্যবহার করা হচ্ছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password