ঢাকায় বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে রাজধানীর হাতিরঝিল, ধানমণ্ডি-২৭, পান্থপথ, এয়ারপোর্ট রোড, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। কোথাও সড়কে হাঁটুপানি জমে গেছে। সন্ধ্যার পর থেকেই বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানী। কোথাও কোথাও সড়কে জমে গেছে হাঁটুপানি। এতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ফলে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয় নিম্ন আয়ের মানুষ। বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচলে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। যার পরিণতি ভয়াবহ যানজট।
আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মক্ষেত্র থেকে ঘরে ফেরা মানুষজন। লম্বা সময় ধরে একই স্থানে আটকে আছে অসংখ্য যানবাহন। দীর্ঘ সময় ধরে ঘুরছে না গাড়ির চাকা। অফিসে শেষে মোটরসাইকেলে কুড়িল থেকে মোহম্মদপুর যাচ্ছিলেন কালাম খান। সন্ধ্যা থেকে পথে আটকে আছেন তিনি।
কালাম বলেন, ‘পানিতে বাইক ডুবে যাওয়ার উপক্রম। যে বৃষ্টি, এর মধ্যে গাড়ি চালানো রিস্কি। তাই বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। কখন বৃষ্টি কমবে আর কখন বাড়ি ফিরব জানি না।’ এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃষ্টি থাকবে আরো দুই দিন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারি বর্ষণের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামীকাল শুক্র ও শনিবার রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
শনিবারও বৃষ্টিপাতের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে পরদিন রবিবার বৃষ্টি কিছুটা কমে আসতে পারে। ফলে এ সময় সারা দেশে দিনের তাপমাত্রাও কিছুটা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
ঢাকাসহ দেশের ২০ জেলার ওপর দিয়ে রাত ১টার মধ্যেই ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে। বৃহস্পতিবার আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ঢাকা, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, রংপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট জেলার ওপর দিয়ে দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিকে সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত অপর এক বার্তায় বলা হয়েছে, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তার আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে ঝাড়খণ্ড এবং তার আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে।
মৌসুমি বায়ুর অক্ষ ভারতের রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু উত্তরাংশে সক্রিয় এবং বাংলাদেশের অন্যত্র মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
এর প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন