ট্রেন আটকে চা-শ্রমিকদের বিক্ষোভ

ট্রেন আটকে চা-শ্রমিকদের বিক্ষোভ
MostPlay

আজ মঙ্গলবার দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার সাতটি চা বাগানের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও ভুখা মিছিল করেছেন। দুপুর দেড়টার দিকে বিক্ষোভ মিছিলটি নিয়ে শ্রমিকরা কুলাউড়া পৌর শহরের স্কুল চৌমুহনী এলাকায় গিয়ে সমবেত হন।

সেখানে দেড়টা থেকে প্রায় ৪টা পর্যন্ত চলে তাদের এই কর্মসূচি। এ সময় চা শ্রমিক ইউনিয়নের শীর্ষ নেতাদের বাগান মালিকদের ‘দালাল’ বলে আখ্যায়িত করে তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এদিকে বিকেল ৫টায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ চা শ্রমিকরা তাদের মজুরি আদায়ের দাবিতে কুলাউড়া স্কুল চৌমুহনী এলাকায় রেলগেটে সিলেটগামী আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রেখে আন্দোলন করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মুহিব উদ্দিন আহমদ। তিনি জানান, বিকেল ৪টায় পাহাড়িকা ট্রেনটি রেলগেট এলাকায় পৌঁছলে চা শ্রমিকরা ট্রেনটি আটকে দেন। এতে ট্রেনে থাকা যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গাজীপুর, মেরিনা, কালিটি, রাঙ্গিছড়া, মুড়াইছড়া, আসকরাবাদ ও রাধানগর চা বাগানের কয়েক সহস্রাধিক শ্রমিক মিছিল নিয়ে বাগান থেকে বের হয়ে স্কুল চৌমুহনীতে এসে একত্র হন।

চা শ্রমিকদের সংগ্রাম চলবে চলবে, মজুরি বৃদ্ধির সংগ্রাম চলবে চলবে, সুচিকিৎসার সংগ্রাম চলবে চলবে, যে হাত শ্রমিক মারে সেই হাত ভেঙে দাও, চা শ্রমিকের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান, চুক্তি নিয়ে টালবাহানা চলবে না চলবে না, ৩০০ দাও নইলে বিষ দাও, ১৪৫ টাকা মজুরি মানি না, ৩০০ টাকা মজুরি দিতে হবে দিতে হবে, চা শ্রমিকের ন্যায্য দাবি মানতে হবে মানতে হবে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কালিটি চা বাগানের শ্রমিক দয়াল অলমিক, অপু দাস, গৌরী অলমিক বলেন, ১৩ দিন ধরে অনাহারে দিন কাটিয়ে আমরা মজুরি বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করছি। আর শ্রমিক নেতারা মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসে মনগড়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। শ্রমিক নেতারা দালালি করে বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন আর আমরা সাধারণ শ্রমিকরা খেয়ে না-খেয়ে আন্দোলন করছি। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নিপেন পাল মঙ্গলবার বিকেলে  বলেন, ‘সবাই এখন আন্দোলনমুখী।

হুট করে জেলা প্রশাসন থেকে ওই দিন আমাদের বৈঠকে বসার কথা বলা হয়েছে। সেখানে আমাদের বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি দেখবেন। তাৎক্ষণিক হওয়ায় শ্রমিকদের বৈঠকের বিষয়টি জানানো হয়নি। এখন যেহেতু বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিবেচনাধীন সেহেতু আমরা সাময়িক আন্দোলন প্রত্যাহার করে শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য সব ভ্যালি কমিটির নেতাদের বলেছি। ’

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password