দেশের ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা, সামাজিক কুসংস্কার এবং বিভিন্ন অপপ্রচার দূর করে ইসলামের সঠিক বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার সারা দেশব্যাপী ৫৬৪ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছেন।
তারই অংশ হিসেবে তৃতীয় পর্যায়ে একযোগে সারাদেশে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোণা জেলার- কেন্দুয়া, মদন এবং বারহাট্টা উপজেলার মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মডেল মসজিদের নব নিয়োগপ্রাপ্ত ইমাম ও খতীব আহমেদ শফি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- কেন্দুয়া আটপাড়ার সদস্য সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। প্রধান অতিথি বলেন- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশব্যাপী ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করে সারা বিশ্বে এক নজির সৃষ্টি করেছেন যা বিশ্বের কোন দেশে সরকারিভাবে একসাথে এতো মসজিদ নির্মাণ করা হয়নি।
এসময় তিনি আরো বলেন, ইসলাম ধর্ম হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শান্তির ধর্ম। তাই ধর্মকে পুঁজি করে কেউ যেন মিথ্যা অপপ্রচার চালাতে না পারে সেই কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী মসজিদ গুলো এমনভাবে নির্মাণ করেছেন যেন মুসল্লীগণ আল্লাহকে রাজি খুশি করতে ধর্মীয় কাজগুলো সহজেই একজন মুসল্লী করতে পারেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী জালালের সভাপতিত্বে ও কেন্দুয়া প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য আশরাফ উদ্দিন ভূঞা’র সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপারভাইজার রেজোয়ানুল হক।
এছাড়াও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (নেত্রকোণা) মো. আশিক নূর, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. আসাদুল হক ভূঞা, মডেল মসজিদের জমিদাতা ও অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মো. খায়রুল ইসলাম খান, সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. বজলুর রহমান, কেন্দুয়া থানার ওসি আলী হোসেন পিপিএম বক্তব্য রাখেন।
জানা যায়, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে হজের রেজিস্ট্রেশন ছাড়াও প্রথম তলায় রয়েছে ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, প্রতিবন্ধীদের নামাজ কক্ষ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বুক সেলস সেন্টার, ডাইনিং কক্ষ, রান্নাঘর, প্রতিবন্ধী কর্নার, মৃত ব্যক্তির গোসলের সুব্যবস্থা, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন কক্ষ, অজুখানা, মসজিদভিত্তিক শিক্ষা প্রকল্পের কক্ষসহ গাড়ি পার্কিংয়ের সুব্যবস্থা। দ্বিতীয়তলায় প্রধান নামাজ কক্ষ, অজুখানা, বাথরুম ও টয়লেট, সম্মেলন কক্ষ, শানের জন্য প্রশস্ত প্রবেশপথ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অফিস কক্ষ ও সুপ্রশস্ত সিঁড়ি।
তৃতীয়তলায় পুরুষ ও মহিলাদের নামাজ কক্ষ, বাথরুম ও টয়লেটের সুব্যবস্থা, অফিস এরিয়া, ইমাম-মুয়াজ্জিন ও প্রশিক্ষক থাকার কক্ষ, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, গেস্টরুম, ইসলামিক লাইব্রেরি, মক্তব ইত্যাদি। এছাড়া গভীর নলকূপ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, গেট, গার্ডরুম, ভূগর্ভস্থ জলাধার, বিদ্যুৎ সাবস্টেশন, জেনারেটর, সাবমারসিবল ও সেন্টিফিউগাল পাম্প, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, উন্নতমানের সাউন্ড সিস্টেমসহ কনফারেন্স সিস্টেম, পিএবিএক্স, কম্পাউন্ড ও সিকিউরিটি লাইট, সোলার সিসিটিভি, বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা, এয়ারকুলার প্রভৃতি।
এছাড়া ৯০ ফুট উচ্চতার মিনার এবং ২৮ ফুট ব্যাসের প্রধান গম্ভুজসহ ১১ ফুট ব্যাসের ২টি ১৩ ফিট ব্যাসের একটি গম্ভুজ নির্মিত হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে গণপূর্ত ময়মনসিংহ বিভাগ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন