নরসিংদীর হাতিরদিয়া বাজারের রাস্তার বেহাল দশা, ভেঙে পড়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা

নরসিংদীর হাতিরদিয়া বাজারের রাস্তার বেহাল দশা, ভেঙে পড়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা

নরসিংদীর হাতিরদীয়া বাজারের রাস্তার বেহাল দশা, কলেজ মাঠে হাটুপানি। ভেঙে পড়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা। নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা একদুয়ারিয়া ইউনিয়ন। উল্লেখ্য ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণ অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধে হাতিরদীয়া স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর ভুমিকা ছিলো অবিস্মরণীয়। গণ অভ্যুত্থানে হাতিরদিয়া বাজারে বয়ে গিয়েছিল রক্তগঙ্গা। বিভিন্ন দিক বিবেচনায় হাতিরদিয়া বাজার নরসিংদী জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান।

অথচ এই বাজার সংশ্লিষ্ট পাতরদিয়া তিন রাস্তার মোড় হতে হাতিরদিয়া বাজার হয়ে ঢাকা- মনোহরদী মুল সড়ক পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশার কারনে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা। জানাগেছে প্রায় দুই বছর ধরে রাস্তাটি যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে অনুপযোগী হওয়ায় অতিরিক্ত ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। তার উপর বৃষ্টিতে পুরো সড়কের যাচ্ছে-তাই অবস্থা। শুধু গাড়ি চালক নয়,পথচারীদের জন্যও দুর্বোধ্য হয়ে উঠছে এ রাস্তা।

মনোহরদী, শিবপুর, কাপাসিয়া উপজেলা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। অনেক মানুষের জীবিকা নির্ভর হয় এ রাস্তার উপর। কিন্তু রাস্তার এ বেহাল দশায় হাতিরদিয়া বাজারে মানুষজন আসাযাওয়া ছেড়ে দেবার উপক্রম হয়েছে। রাস্তাটির একজায়গায় কালভার্ট ভেংগে পড়েছে। বাজারজুড়ে অসংখ্য হাটুপরিমান খানাখন্দ আর বর্জযুক্ত পানি মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্থ করছে।

রিক্সা, ভ্যান, অটো রিকশা, মালবাহী ট্রাক, পিকাপ এখন বাজারের রাস্তায় না গিয়ে বিকল্প রাস্তা ব্যাবহার করছে। ফলে বিকল্প রাস্তাটির উপর চাপ বেড়ে যাওয়ায় এই রাস্তাটিও ভেংগে গিয়ে যানযট সৃষ্টি করছে। অটো চালক হারুন মিয়া ও আবদুল মতলিব বলেন, "এ রাস্তায় গাড়ি লইয়া নামলে বাড়ি ফিরতে পারমু কিনা তার গ্যারান্টি নাই। যেকোনো সময় রাস্তায় পইড়া মরতে পাড়ি । জানিনা ঠিক কতদিন আমাদের মতো মানুষদের এ ভোগান্তি সহ্য করতে হবে।

সামান্য বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় হাতিরদিয়া রাজিউদ্দিন ডিগ্রী কলেজ মাঠ। মাঠের চারিদিকে বড় রাস্তা ও বাজারের বিভিন্ন স্থাপনা কিছুটা উচু। তাই সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি সব গড়িয়ে কলেজ মাঠে জমে হাটুপানিতে পরিণত হয়। দীর্ঘদিন জমে থাকা পানিতে কখনো কখনো হাঁস ভেসে বেড়ায়, বাচ্চারা জলকেলিতে মেতে উঠে।

চাঁদনী রাতে মনে হয় মাঠে একটি বিরাট পুকুর খনন করা হয়েছে। বছরের পর বছর এই অবস্থায় হাতিরদিয়া কলেজ এভাবেই চলছে। কলেজ মাঠে দ্রুত মাটি বা বালু ভরাট করে চারদিকে ড্রেনেজ সিস্টেম করে চৌবাচ্চার উপরে জালি বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা হলে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। তাছাড়া পানি নিষ্কাশনের আরেকটি পদ্ধতি বিদ্যমান রয়েছে। কলেজের নতুন ভবনের পিছনে এবং হাতিরদিয়া স্কুলের সীমানা প্রাচীর ঘেষে একটি ড্রেন রয়েছে। ড্রেনটি কলেজ মাঠের তুলনায় কিছুটা উঁচু তাই পানি নিষ্কাশিত হতে পারছেনা। ড্রেনটি একটু পরিষ্কার করে আরও এক থেকে দেরফুট নীচু করলে অনায়াসে পানি নিষ্কাশিত হতে পারত।

এই কাজটি বাস্তবায়ন হতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হতে পারে। কিন্ত এই সামান্য সিদ্ধান্ত নেবার একজন লোক কলেজে কিংবা প্রশাসনে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। মনোহরদী উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধির কাছে এলাকাবাসীর আকুল আবেদন, খুব দ্রুত হাতিরদিয়া বাজার রাস্তা ও কলেজ মাঠের বেহাল দশা থেকে জনগনকে মুক্তি দিন। হাতিরদিয়া বাজার থেকে প্রতিবছর আহরিত লাখ লাখ টাকা রাজস্ব শুধুমাত্র এই বাজারের উন্নয়ন কাজে ব্যায়ের জোড় দাবী জানাচ্ছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password