সার্জারি করাতে গিয়ে প্রাণ হারান এই অভিনেত্রী!

সার্জারি করাতে গিয়ে প্রাণ হারান এই অভিনেত্রী!
MostPlay

কৈশোরে সুনীল শেঠিকে দেখে নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন। পরে ছুঁতেও পেরেছিলেন নিজের স্বপ্ন। হিন্দি ছবিতে আত্মপ্রকাশের পরে অভিনয় করেছিলেন তেলুগু ছবিতেও। কিন্তু মাত্র একত্রিশেই জীবন থেকে বিদায় নিতে হয় অভিনেত্রী আরতি আগারওয়ালকে। কসমেটিক সার্জারির মাসুল দিতে গিয়ে।

আরতির জন্ম ১৯৮৪’র ৫ মার্চ, আমেরিকার নিউ জার্সি শহরে। সেখানেই তার বাবা শশাঙ্ক হোটেলের ব্যবসা করতেন। মা, ভীমা ছিলেন গৃহবধূ। দুই ভাইবোনের সঙ্গে আরতির শৈশব কেটেছিল আমেরিকাতেই।

বলিউডের সঙ্গে আরতির সরাসরি সাক্ষাৎ মাত্র ১৪ বছর বয়সে। ফিলাডেলফিয়ায় এক অনুষ্ঠানে তিনি সুনীল শেঠিকে নাচতে দেখেন। ভিড়ের মধ্যে আরতিকে দেখে মঞ্চে ডেকে নেন সুনীল।

মঞ্চে আরতির পারফরম্যান্স দেখে মুগ্ধ হয়ে আরতির বাবাকে সুনীল বলেন, তিনি যেন মেয়েকে উৎসাহ দেন পরবর্তী সময়ে অভিনয়কে পেশা হিসেবে গ্রহণের জন্য।

বলিউড থেকে সুযোগও এল তাড়াতাড়ি। ২০০১ সালে নবাগতা আরতি অভিনয় করলেন তার প্রথম ছবি ‘পাগলপন’-এ। বিপরীতে নায়ক ছিলেন নবাগত কর্ণ নাথ। সে বছরই দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতেও হাতেখড়ি হয় আরতির। তিনি অভিনয় করেন তেলুগু ছবি ‘নুভু নাকু নাচভ’-এ। ‘পাগলপন’-এর পরে আরতি আর হিন্দি ছবিতে ফিরে আসতে পারেননি। অভিনয় করে গিয়েছেন তেলুগু ছবিতেই।

মাতৃভাষা তেলুগু নয়, এমন যে কয়েকজন দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে সুনামের সঙ্গে অভিনয় করেছেন, আরতি তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি অভিনয় করেছেন একটি তামিল ছবিতেও।

ভেঙ্কটেশ, চিরঞ্জিবী, নাগার্জুন, রবি তেজা, মহেশ বাবু এবং এনটিআর জুনিয়রসহ দক্ষিণের নামী তারকাদের নায়িকা আরতি পরবর্তী সময়ে চরম অবসাদের শিকার হন।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ২০০৫ সালে তিনি একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে তিনি ভর্তি হন হাসপাতালে। সেবার দীর্ঘ চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়ে ঘরে ফেরেন তিনি। যদিও আরতির দাবি ছিল, তিনি দুর্ঘটনায় আহত হন।

শোনা যায়, সহ-অভিনেতা তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার জেরে তিনি আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। পরের বছর, ২০০৬ সালেও তিনি আরও একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে শোনা যায়। কিন্তু প্রতি বারই আত্মহত্যার চেষ্টার দাবি উড়িয়ে দিয়েছিলেন আরতি।

২০০৭ সালে আরতি বিয়ে করেন আমেরিকাবাসী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল কুমারকে। বিয়ের পরে অভিনয় ছেড়ে আরতি পাড়ি দেন আমেরিকা। কিন্তু দাম্পত্য স্থায়ী হয়নি। দু’বছর পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আরতি পরে জানান, বিয়ের পরে তার অভিনয় করে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েই সমস্যা শুরু হয়েছিল।

বিচ্ছেদের পরেও আরতি অভিনয়ে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। ক্যারিয়ার এবং‌ দাম্পত্য, দু’দিকেই বিধ্বস্ত হয়ে ক্রমশ অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সে সময় নিউজার্সিতে বাবা মায়ের সঙ্গে থাকতেন আরতি। কিন্তু বাবা মায়ের সান্নিধ্যও পারেনি তাঁর মানসিক অবস্থার উন্নতি করতে।

রোগা হওয়ার লক্ষ্যে তিনি ২০১৫ সালে লাইপোসাকশন করান। তার দেড় মাস পরেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে তাকে ভর্তি করা হয় নিউ জার্সির হাসপাতালে। সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন এই সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী।

চিকিৎসকদের ধারণা, লাইপোসাকশনের মতো কসমেটিক সার্জারির পরে সংক্রমণের কারণে মাত্র ৩১ বছর বয়সেই প্রাণ হারান আভিনেত্রী আরতি আগারওয়াল। তার বোন অদিতি আগরওয়ালও পরে অভিনয় করেছেন তেলুগু ছবিতে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password