গতরাতে নাশতা নিয়ে ফিল্ম ক্লাবের কর্মচারীর সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা শুরু করেন প্রযোজক ইকবাল হোসেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি নায়ক ওমর সানীকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এই ঘটনায় শঙ্কিত হয়ে ওমর সানী প্রত্যক্ষদর্শীদের স্বাক্ষর নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। গত রাতের পর থেকে এখনো আতঙ্কে আছেন এই নায়ক। তিনি মনে করছেন, যেকোনো সময় তাঁর সঙ্গে খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে। তিনি শিগগির প্রযোজক ইকবালের গ্রেপ্তার চান। তবে ইকবালের দাবি, তাঁর নামে মিথ্যা অভিযোগ এনে জিডি করেছেন ওমর সানী।
ওমর সানী জানান, তখন রাত পৌনে ১০টা। ৭/৮ জনকে নিয়ে একটি রুমে বসে ছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফিল্ম ক্লাবের সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট ও কেবিনেটের সদস্যরা। এমন সময় প্রযোজক ইকবাল ঢুকে ক্লাবে খাবার না থাকায় ক্লাব নিয়ে নানা রকম বাজে কথা বলতে থাকেন। জানা যায়, ক্লাবে রাত ৯টার পরে খাবার প্রস্তুত থাকে না। কেউ খেতে চাইলে তাঁকে অর্ডার দিয়ে খেতে হবে। তখন ইকবাল দুইটা ডিম চান। ক্লাবের কর্মচারী ডিমের টাকা চান। টাকা চাওয়ায় ইকবাল ছেলেটির ওপর রেগে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে প্রযোজক ঢালিউড নায়ককে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এমনটাও বলেন, ক্লাব বন্ধ করে দেবেন। ওমর সানী বলেন, ‘সেই ছেলেটিকে আমি তখনই বলি, তুমি সঙ্গে সঙ্গে টাকা চাইলা কেন? তিনি একজন সম্মানিত সাবেক সেক্রেটারি। তখন সে (ইকবাল) আমাকে বলে, “এরা তোর ইশারায় চলে।” একপর্যায়ে সে আমার মাকে তুলে যা তা বলে গালিগালাজ করেন। আমি তাকে কাউন্টারে কিছু বলি নাই। তখন ক্লাবে থাকা সবাই উপস্থিত ছিলেন। সে কাঁটাচামচ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনবার আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করেছে। তাকে সবাই ফিরিয়েছে, নইলে কালই আমি মার্ডার হয়ে যেতে পারতাম। আমি এখনো শঙ্কিত। সে যেকোনো মুহূর্তে আমার ক্ষতি করে দিতে পারে। এই জন্য বাধ্য হয়ে আমি রাতেই জিডি করেছি।’ পরে রাত ১১টার সময় মিটিং ডেকে তাঁরা ফিল্ম ক্লাবের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে ইকবালকে প্রাথমিক ভাবে ছয় মাসের জন্য তার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। ওমর সানি জানান, তিনি প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
ফিল্ম ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি ও প্রযোজক ইকবাল দাবি করেন, অনেক দিন ধরে ফিল্ম ক্লাবে জুয়াসহ বেশ কিছু অনৈতিক কাজ হচ্ছিল। যেখানে বেশির ভাগই বাইরের মানুষ এসে যোগ দেয়। এ জন্য আলাদা একটি রুমও ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এগুলোর প্রতিবাদ করায় তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘তাদের অনৈতিক কাজগুলো দেখে আমি নিজেই বলেছি আমাকে সাসপেন্ড করেন। আমি তাদের সঙ্গে আর থাকব না। এই নিয়েই কথা হয়েছে। অন্য কথা তিনি জিডি করার জন্য মিথ্যা বলেছেন।’ অনৈতিক কোনো কাজের প্রমাণ আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই প্রমাণ।’ তবে ওমর সানী জানান, নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে তাঁদের নিয়ে অনেক আগে থেকে মিথ্যাচার শুরু করেছেন ইকবাল। তাঁর নামে আরও অভিযোগ থাকায়, ক্লাব থেকে কেন তাঁকে বহিষ্কার করা হবে না, সেই মর্মে চিঠি দেওয়া হয়। গত ১৭ তারিখে তাকে সাবধানতা অবলম্বন করে আরেকটি চিঠি দিলে সে ক্ষমা চেয়ে ক্লাব বরাবর চিঠি দেয়। এখানে বানোয়াট কথা বলেছেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন