জেলখানায় বসে হত্যার পরিকল্পনা

জেলখানায় বসে হত্যার পরিকল্পনা
MostPlay

গাজীপুরে র‌্যাব-পুলিশের সোর্স সাগর হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় জড়িত মাদক ব্যবসায়ী চার যুবককে শুক্রবার আটক করেছে র‌্যাব-১’র সদস্যরা। র‌্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন। আটকরা হলেন- গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সদর থানার বাহাদুরপুর এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে মোঃ লিটন (২৩), একই গ্রামের আব্দুল আলীর ছেলে শরীফুল ইসলাম (৩৮) ও আমিরুল ইসলামের ছেলে মোঃ আরমান (১৯) এবং একই থানার ভাওরাইদ দক্ষিণপাড়া এলাকার জহিরুল ইসলামের ছেলে মোঃ শাহীন (২২)।  

র‌্যাব-১’র কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার চরনীখলা এলাকার মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে সাগর মিয়া (১৮) গাজীপুরের সদর থানার বাহাদুরপুর এলাকার বিল্লাল হোসেনের বাড়ি ভাড়া থাকতেন। তিনি র‌্যাব ও পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। গত ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় তিনি নিখোঁজ হন। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পায়নি। নিখোঁজের তিনদিন পর ১৯ অক্টোবর দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর নান্দুয়াইন চাতুরা পাড়া এলাকায় গজারী বনের ভিতরে নাফিস গার্ডেন রিসোর্টের পাশের ধান ক্ষেত থেকে গলা কাটা অজ্ঞাত যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন ছিল। পরে পরনের পোশাক, স্যান্ডেল ও বেল্ট দেখে লাশটি সাগরের বলে সনাক্ত করে তার স্বজনরা। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। 

তিনি জানান, র‌্যাব-১ ক্লুলেস এ ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত ওই চারজনকে শুক্রবার ভোররাতে গাজীপুর সদর থানার বিভিন্ন এলাকা হতে আটক করে র‌্যাব-১’র সদস্যরা। তারা মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা সাগর হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, সম্প্রতি বিভিন্ন মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার করে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এজন্য সোর্স সাগরকে দায়ী করে তারা। গ্রেফতারকৃতরা জেলখানায় বসে পথের কাঁটা সরাতে সাগরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। মাসখানেক আগে গ্রেফতারকৃতরা জেলখানা থেকে জামিনে মুক্তি পায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী জেলখানা থেকে মুক্তি পেয়ে তারা সাগরের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে তুলে। ঘটনার দিন ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় তারা সাগরসহ স্থানীয় ভিমবাজার এলাকায় মদ পান করে। পরে ইয়াবা টেবলেট দেওয়ার কথা বলে সাগরকে ন্যাশনাল পার্কের গহীন বনের ভিতর নিয়ে যায়। এসময় বনের ভিতর আরো কয়েকজন চাকু ও লাঠি নিয়ে অবস্থান করছিল। সেখানে পৌঁছালে তারা সাগরকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে আমিরুল (পলাতক) গামছা দিয়ে সাগরের গলা গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে এবং অন্যরা সাগরের হাত-পা চেপে ধরে রাখে। এসময় আমিরুল চাকু দিয়ে সাগরের গলা কেটে ফেলে এবং এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে সাগরের লাশ কাঁধে করে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় নাফিস গার্ডেন রিসোর্টের পাশের ধান ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায় তারা। ঘটনার পর থেকে আমিরুল পলাতক রয়েছে। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password