করোনাভাইরাসের নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট বিক্রি করতেন তারা

করোনাভাইরাসের নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট বিক্রি করতেন তারা
MostPlay

করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত দেশ। এটির মোকাবেলায় এবং জনগণকে রক্ষায় সর্বাত্তক চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। তবুও এই আতঙ্ককে পুঁজি করে কিছু অসাধু মানুষের জালিয়াতি যেন থামছেই না। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন উপায়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায়সহ নিম্নমানের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিক্রি করছে।

এবার জালিয়াতি কর্মকাণ্ডে সবাইকে ছাড়িয়ে গেল ঢাকার সাভারের একটি অসাধু চক্র। তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের নামমাত্র মূল্যে ‘করোনা নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট বিক্রি করছে। মূলত ওই এলাকার বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে তারা এই ব্যবসা চালু করেছে।

জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিটি পোশাক কারখানায় কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের নিয়মিত শারীরিক তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। কারো শরীরে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকলে তাকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। এক্ষেত্রে অনুপস্থিতির দিন হিসেবে নির্ধারিত মজুরি কেটে নিতে পারে কর্তৃপক্ষ, এমন আতঙ্ক বিরাজ করছে শ্রমিকদের মনে।

তাই মজুরি কেটে নেয়ার ভয়ে বাধ্য হয়েই কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত নন মর্মে জাল ‘করোনা নেগেটিভ’ সার্টিফিকেট কিনে কর্তৃপক্ষকে দিচ্ছেন শ্রমিকরা। বিষয়টি কারখানা কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পরই অভিযান চালিয়ে জালিয়াতি চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তাদের একজনের নাম সাইদ। আটক দুজনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ সার্টিফিকেট।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম সায়েদ জানান, চাকরি নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের আতঙ্ককে পুঁজি করে বেশ কিছুদিন ধরেই জালিয়াতির এই ব্যবসা করে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্র।

ওসি জানান, সম্প্রতি দেনিটেক্স নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে এ ধরনের বেশ কিছু সার্টিফিকেট আসে। যেটি দেখে তাদের সন্দেহ হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে তারা। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেজিস্ট্রারে সার্টিফিকেটধারী কারও নাম তারা খুঁজে পায়নি। পরে কৌশল অবলম্বন করে দেনিটেক্স কর্তৃপক্ষ সার্টিফিকেটগুলো যে ঠিকানা থেকে পাঠানো হয়েছে, সেখানকার এক ব্যক্তিকে ডেকে আনেন। পরে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জানা যায়, ওই ব্যক্তি পশ্চিমবাংলা এলাকার একটি ফার্মেসির মালিক। তার নাম সাইদ।

ওসি আরও জানান, সাইদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরেকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। আটককৃতদের নিয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযান শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সায়েমুল হুদা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতির মধ্যেও সার্টিফিকেটের ব্যবসার মতো অনৈতিক কার্যকলাপে প্রতারকরা যুক্ত হবে এটা কল্পনাও করিনি। পুলিশ তাদের আটক করেছে। আইনানুগ ব্যবস্থায় তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, এটাই চাই।’

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password