লোকসানের মুখে পড়ছে পেঁয়াজ চাষিরা

লোকসানের মুখে পড়ছে পেঁয়াজ চাষিরা

এখন চলছে পেঁয়াজ ঘরে তোলার মৌসুম। পাবনার সাঁথিয়ার চাষিরা তাদের অধিকাংশ পেঁয়াজ ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হওয়ায় তাদের চোখে মুখে খুশির ঝলক। তবে বর্তমান বাজার দর কম থাকায় লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস ও কৃষক সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষমাত্রার চেয়ে চলতি বছর এ উপজেলায় পেঁয়াজের আবাদ ৭৫০ হেক্টর বেশি হয়েছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিল ও মাঠে ব্যাপক পেঁয়াজের আবাদ করে কৃষকরা।

অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক পরিচর্যায় কৃষকদের পেঁয়াজের ভালো উৎপাদন হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা তীব্র গরম উপেক্ষা করে পেঁয়াজ তুলতে শ্রমিক নিয়ে ভোর থেকে মাঠে উপস্থিত হচ্ছে। শ্রমিক ও পরিবারের মহিলা, শিশুদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন জমি থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহে। মহিলারা রাত গভীর পর্যন্ত পেঁয়াজের অগ্রভাগ কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার উপজেলার সবচেয়ে বড় হাট কাশিনাথপুর সাপ্তাহিক পেঁয়াজের হাট ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে পেঁয়াজ ৭শ থেকে ৯শ টাকা দামে বিক্রয় হচ্ছে, যা কৃষকের জন্য মাথায় আকাশ ভেঙে পড়া।

উপজেলার বিষ্ণুবাড়িয়া গ্রামের বাবলু ও বাবু জানান, উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক কম দামে পেঁয়াজ বিক্রয় করতে হচ্ছে; যা শ্রমিকদের দিতেই শেষ হচ্ছে। গৌরীগ্রামের গ্রামের পেঁয়াজ রোপণকারী কৃষক আজম আলী জানান, এত খরচের পরও পেঁয়াজের বাজার এ বছর কম থাকায় আর্থিকভাবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার পেঁয়াজের বাজার তাদের অনুকুলে না রাখলে কৃষকরা এ আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।

বোয়াইলমারী গ্রামের আমজাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাটে ৫ মণ পেঁয়াজ এনেছিলাম। প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ৭৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছি। ১ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১২শ থেকে ১৩শ টাকা। ঋণের টাকা দিতে জায়গা জমি বিক্রি করতে হবে। উপজেলার ধনী শ্রেণির কৃষকরা জমির পেঁয়াজ ঘরে সংরক্ষরণ করছে বেশি দামের আশায়।

তবে ক্ষুদ্র মাঝারি ও দরিদ্র শ্রেণির কৃষকদের বিভিন্ন প্রয়োজনে হাটে পেঁয়াজ বিক্রয় করতে হচ্ছে। এতে করে তারা কম দাম পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ছে। সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী জানান, চলতি বছর জমিতে পেঁয়াজের ভালোই উৎপাদন হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সাধ্যমতো পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। হাটের ইজাদাররা বলেন, মৌসুমের সময় দেশের বাইরে থেকে পেঁয়াজ আমদানি করায় বাজারগুলোতে দেশের উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম কম।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password