আজ দেশের সব মানুষের মাঝে যে আলোচনাটি সবার প্রথমে চলে আসে সেই পরীমনি কাণ্ডে পরীমনি কি করে গেলেন সেই বোট ক্লাবে? কেন গেলেন? চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আলোচনায় এসেছে রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত সেই ঢাকা বোট ক্লাব।

সাভারের বিরুলিয়ায় অবস্থিত ক্লাবটি, যার বিনোদন ও সংস্কৃতিবিষয়ক নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। তার বিরুদ্ধেই ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার গুরুতর অভিযোগ এনেছেন ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনি।

অভিনেত্রী পরীমনির সাথে এই বিচ্ছিন্ন ঘটনাটি ঘটার পর ভিবিন্ন যায়গায় ঘুরেও কোন আইনের সুরাহা নাআ মিললে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। পরে সোমবার সাভার থানায় পরীমনির করা মামলায় প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ গ্রেফতার হয়েছেন এবং ক্লাবটি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। একই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন তারই বন্ধু অমি। যিনি পরীমনিকে ওই ক্লাবে নিয়ে যান।

সোমবার গ্রেফতারের সময়ও অমির পুরো নাম আলোচনায় আসেনি। পরীমনি যে মামলা করেছেন, সেখানে শুধু অমি নামই উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টা পরই একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নাসির উদ্দিন মাহমুদকে ক্লাবের নির্বাহী কমিটি থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকেই অমির পুরো নাম জানা যায়। তার নাম তুহিন সিদ্দিকী অমি। তিনিও এই ক্লাবের সদস্য। তার সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বোট ক্লাব কর্তৃপক্ষ। একই ঘটনায় ওই ক্লাবের শাহ এস আলম নামের আরেকজনের সাধারণ সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে।

ধারণা করা হচ্ছে, রোববার সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি বলেছিলেন, শার্টের বোতাম খুলে একজন ‘বয়স্ক লোক’ কাঁচের ওপর অশ্লীল ভঙ্গিতে নাচছিলেন। তিনিই হয়ত শাহ এস আলম। যদিও বিষয়টি নিশ্চিত নয়, এবং শাহ এস আলম সম্পর্কে পুলিশ কোনো তথ্য না দেয়নি।

রাত ১২টায় বোট ক্লাবে কেন গিয়েছিলেন এই প্রশ্নের জবাবে পরীমনি জানিয়েছেন, তার বন্ধু অমিই তাকে কৌশলে ওই ক্লাবে নিয়ে যায়। তিনি জানতেনও না যে, ওটা একটা ক্লাব আর সেখানে মদের আসর বসে। মূলত অমি পরীমনির ব্যক্তিগত কস্টিউম ডিজাইনার জিমির বন্ধু। সেই সুবাদে পরীমনির বাসায় অমির যাতায়াত। সংবাদ সম্মেলনে অমিকে পরীমনি ভাইয়া বলে সম্বোধন করেছেন।

অমি কীভাবে তাকে ওই ক্লাবে নিয়ে যায় তার বর্ণনায় সাংবাদিকদের পরীমনি বলেন, বনানীতে গাড়ি থামিয়ে ওষুধ কেনার পর আমরা উত্তরায় যাচ্ছিলাম। অমি ভাইয়া আমাদের সঙ্গে ছিল।তিনি বলেন, আমার দুই মিনিটের কাজ আছে। জিমিকে বারবার রিকোয়েস্ট করছিলেন অমি। বলছিলেন, এখন তো রাস্তা ফাঁকা। বেশিক্ষণ লাগবে না। জাস্ট দুই মিনিটের ব্যাপার একটু টাইম দে। অমি আমাদের ওই ক্লাবের কাছে নিয়ে যায়। প্রথমে তাকে সিকিউরিটি ঢুকতে দিচ্ছিল না। কাকে যেন ফোন দিয়েছিলেন তিনি, তখন রাত ১২টা। তখন ওই লোকটা আসল যার সঙ্গে তার কাজ ছিল। 

পরীমনি বলেন, ওই সময় আমার সঙ্গে থাকা মেয়েটার বাথরুমে ধরেছিল। অমি ভাইয়া বলেছিল, এখানে সমস্যা নেই ওয়াশরুমে যেতে পার। তখন বেনজির ভাইয়ের নাম বলল। ওয়াশ রুমে তো যেতেই পারি। তখন তার (অমি) বড় ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছিল। ওখানে আমরা বসছি। ওখানে মদ খাচ্ছিল তারা। ওখান থেকেই এসে বলল ও পরীমনি তুমি আসছ। তখনই বুঝতে পেরেই আসলে তিনি ওভার ড্রাংক। আমি তাকে দাদা বলে সালাম দিই। উনি বললেন বসো বসো কোনো সমস্যা নেই, বাচ্চা মেয়ে।

প্রসঙ্গত, পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা মামলায় ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়। উত্তরার একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে নাসির ও অমিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় নাসিরের সঙ্গে থাকা অল্পবয়সী তিন নারীকেও গ্রেফতার করা হয়।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, যে বাসা থেকে নাসিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেটি অমিরই বাসা। পরীমণির সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে নাসির তার তিন রক্ষিতাকে নিয়ে এ বাসায় লুকিয়ে ছিলেন। গ্রেফতারদের মধ্যে অমির গার্লফ্রেন্ড স্নিগ্ধাও রয়েছেন।