সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল চাঁদপুরের তিন যুবকের

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল চাঁদপুরের তিন যুবকের

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। তাদের বাড়ি চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলায়। সৌদি আরবের আল নাজাদ অঞ্চলের আপিপ শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। তাদের বাড়ি চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলায়।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় কাজে যাওয়ার সময় তারা দুর্ঘটনার শিকার হন। তাদের মধ্যে নিহত সবুজ চৌকিদার (৩৮) ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পশ্চিম বিশকাটালি গ্রামের জামাল চৌকিদারের ছেলে, মো. সাব্বির (২১) পার্শ্ববর্তী হাইমচরের আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙা গ্রামের সৈয়াল বাড়ির মো. ইসমাইল সৈয়ালের ছেলে ও মো. রিফাত (২০) একই উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।

আজ শুক্রবার সকালে নিহত তিন শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে শোকের মাতম দেখা যায়। স্বজনরা তাদের স্মরণে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে এ দুর্ঘটনার খবরে মাটি হয়ে গেছে পরিবারের সদস্যদের আনন্দ-উদযাপন। রিফাত তিন বছর আগে কাজের সন্ধানে সৌদি আরব যান। ভবন নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি।

তাঁর বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন আগেও ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে বলেছিলাম, ঈদে যেন বাড়ি আসে। ঠিকই হয়তো আসবে; ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত করে, লাশ হয়ে।ছেলের শোকে বাকরুদ্ধ নিহত সাব্বিরের বাবা ইসমাইল সৈয়াল ও মা ফাতেমা বেগম। প্রতিবেশীরা তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

তাদের একটাই দাবি, তাদের সন্তানের লাশ দেশে আনার জন্য সরকারিভাবে যেন সহযোগিতা করা হয়। সাব্বিরের ছোট বোন স্নেহা বলেন, ‘ভাই আমাকে ফোনে অনেক স্বপ্নের কথা বলতেন। দেশে এলে কী কী করবেন, সেগুলো বর্ণনা করতেন। কয়েক দিন আগেও তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি দেশে আসার জন্য বলেছিলাম। আমরা তিন ভাইবোন। ভাইয়েরা সৌদি আরবে থাকতেন। একজন লাশ হয়ে ফিরে আসছেন। তাদের ছাড়া কীভাবে ঈদ উদযাপন করব, ভেবে পাচ্ছি না।’

জানা গেছে, সাব্বির ও রিফাতকে সৌদিতে কাজের জন্য নিয়ে যান সবুজ। তিনি তাদের নিয়ে আপিপ শহর ও আশপাশের এলাকায় ভবন নির্মাণের কাজ দেন। তারা নিজেদের গাড়িতে কাজে আসা-যাওয়া করতেন। গাড়ি চালাতেন সবুজ। দুর্ঘটনার সময়ও সবুজ ড্রাইভিং সিটে ছিলেন।

সবুজের বাবা জামাল জানান, সবুজ প্রায় ১৮ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে থাকতেন। বেশ কয়েকবার গ্রামে এসেছেন। এই প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে। তাদেরও ভ্রমণ ভিসায় কয়েকবার সৌদি নিয়ে গেছেন।

সর্বশেষ দুই সপ্তাহ আগে দেশ থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের সৌদিতে নিয়ে যান। তারা এখনও সেখানে আছেন। হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, ‘সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। আমাদের জানালে লাশ দেশে আনাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password