খুলনায় নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যায় বাবা-ছেলেসহ তিনজনের যাবজ্জীবন

খুলনায় নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যায় বাবা-ছেলেসহ তিনজনের যাবজ্জীবন

খুলনার ফুলতলায় মৎস্যঘেরের নিরাপত্তাকর্মী কুদ্দুস শেখ হত্যা মামলায় বাবা-ছেলেসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার দুপুরে খুলনার সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, ফুলতলা উপজেলার বেগুনবাড়ি পশ্চিম পাড়া এলাকার মাহবুব মোল্ল্যা ও তার পিতা সিদ্দিক মোল্ল্যা এবং বেগুনবাড়ি পূর্বপাড়া এলাকার আনছার মোড়লের ছেলে ইসরাইল মোড়ল।

একইসঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৫ মে রাতে মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম শেখের চাচা কুদ্দুস শেখ মৎস্যঘেরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাত ২টার দিকে ঘরের পাশে টর্চ লাইট মেরে ঘোরাফেরা করছিলেন স্থানীয় মাহবুব মোল্লা, ইসরাইল মোড়ল ও সিদ্দিক মোল্লা। এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কুদ্দুস শেখ তাদেরকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলে তারা ক্ষিপ্ত হন এবং তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরদিন ১৬ মে সকালে বাদীর চাচা কুদ্দুস শেখ বিষয়টি ভাতিজা রফিকুল ইসলাম ও স্ত্রী ঝর্ণা বেগমকে জানান এবং সালিশ ডাকার উদ্যোগ নিলে আসামিরা আরো ক্ষিপ্ত হন। ১৭ মে সন্ধ্যার দিকে মামলার আসামি ইসরাইল ও মাহবুব মোল্লা তাদের মাঠের শ্যালো মেশিন নষ্ট হয়েছে এমন কথা বলে কুদ্দুস শেখকে মেরামতের অনুরোধ জানান এবং মেরামত বাবদ তাকে মজুরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

কুদ্দুস শেখ ইসরাইল মাহবুব মোল্লার সঙ্গে মেশিন মেরামতের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তবে ওই রাতে তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। পরদিন ১৮ মে সকালে বাদী রফিকুল ইসলামের ঘেরের ৩০০ গজ পশ্চিমে সোহরবের ঘেরের মধ্যে কুদ্দুসের মরদেহ করে পুলিশ। এ ঘটনার আসামি মাহবুব মোল্লা, ইসরাইল ও সিদ্দিক মোল্লা সহ আরো ২/৩ জন অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।

কুদ্দুস শেখকে শ্যালো মেশিন মেরামতের কথা বলে ১৭ মে সন্ধ্যার দিকে ডেকে নেয়ার পর থেকে ১৮ মে সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যবর্তী সময়ে বাদীর চাচাকে হত্যা করে সোহরবের ঘেরে ফেলে রাখা হয়। এ মামলায় আব্দুল্লাহ আল মামুনকে তদন্তভার দেয়া হয়। ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য আমলে নেয় খুলনার দায়রা জজ আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার মামলার রায় প্রদান করা হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password