হত্যার সাড়ে তিন বছর পর রহস্য উন্মোচন করল পিবিআই

হত্যার সাড়ে তিন বছর পর রহস্য উন্মোচন করল পিবিআই

প্রায় সাড়ে তিন বছর পর চরমপন্থী নেতা আবু হানিফের (৪৫) হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পাবনা।

সোমবার (১৫ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে সদর উপজেলার আতাইকুলা থানার ছোট বনগ্রাম দোপপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পাবনা জেলার আতাইকুলা থানার ছোট বনগ্রামের মৃত আ. মজিদের ছেলে রেজাউল করিম রেজা (৩৪) ও একই গ্রামের মৃত আ. রাজ্জাক ওরফে রজব আলীর ছেলে মাইক্রোবাস ড্রাইভার আ. মতিন (৪০)।

পিবিআই পাবনা সূত্রে জানা গেছে, চরমপন্থী নেতা আবু হানিফ ২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর বগুড়া যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এর তিনদিন পর ২৭ নভেম্বর আতাইকুলা থানার বুধগাড়ী বিলের মধ্যে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।

নিহত আবু হানিফের ভাই আবু তালেব মোল্লা একই দিন আতাইকুলা থানায় হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশ এ হত্যার রহস্যের সূত্র উদ্ধারে ব্যর্থ হয়।

পরে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দেয়া হয়। পিবিআই তদন্ত শুরু করে প্রথম দুই বছরে রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। নতুন তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) সবুজ ২০২০ সালের মার্চ মাসে তদন্ত শুরু করেন।

পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সবুজ বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে বিডিটাইপকে বলেন, সোমবার (১৫ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে পিবিআই পাবনার একটি দল অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডে তাদের আরো কয়েকজন সহযোগী ছিলেন।

গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, আসামিদের সঙ্গে আবু হানিফের কলহের জেরে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। তার আগে পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৭ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে আবু হানিফকে আটঘরিয়ার চাচকিয়া গ্রাম থেকে মাইক্রোবাস ড্রাইভার আ. মতিন তার গাড়িতে তুলে নেয়।

এরপর আবু হানিফকে আতাইকুলা থানার বটতলা বুধগাড়ি বিলের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে মাইক্রোবাস থেকে বের করে ধারালো চাপাতি ও হাসুয়া দিয়ে কোপানো হয়।

একপর্যায়ে তারা হানিফকে বুধগাড়ী বিলের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে কুপিয়ে তার দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। এছাড়া হানিফের উভয় পায়ে কোপানো হয়। এতে একটি পা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

এরপর আবু হানিফের মৃতদেহ গোপন করার জন্য বুধগাড়ীর বিলের কচুরি পানার স্তুপের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সবুজ বলেন, হত্যার ধরন দেখেই বোঝা যায় যে আবু হানিফের প্রতি তাদের চরম আক্রোশ ছিল।

পিবিআই পাবনা জেলা প্রধান পুলিশ সুপার ফজলে এলাহী বিডিটাইপকে বলেন, আসামিরা এই ঘটনার পর বেশ কিছুদিন পালিয়ে ছিলেন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা গ্রামে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করেন।

পিবিআই এর উপ-পরিদর্শক (এসআই সবুজ) বলেন, আসামিদেরকে গত সোমবার (১৫ মার্চ) আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তারা আদালতে হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়া তারা অন্যান্য আসামিদের নাম-ঠিকানাও পিবিআইকে জানিয়েছেন।

ঘটনার সাথে জড়িতদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আসামিদের গাড়িটি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password