দুই হাত নেই তাতে কি, সাতারে নামলেই স্বর্নপদক জিতে নেন

দুই হাত নেই তাতে কি, সাতারে নামলেই স্বর্নপদক জিতে নেন

মানুষের ইচ্ছা শক্তি থাকলে যে সবই সম্ভব তার প্রমান চাইনিজ ঝ্যাং তাও। চাইনিজ ঝ্যাং তাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনায়। টোকিও প্যারালিম্পিকে চারটি স্বর্ণ নিজের করেছেন। দুই হাত না থাকায় মানুষের মনও জয় করেছেন চীনের এই সাঁতারু। তার কাছে দুই হাত নয় মনের শক্তিটাই বড়।

জানা যায় ছোট বেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুটি হাতই হারাতে হয় ঝ্যাংকে। তবু এবারের আসরে ফ্রি স্টাইল, ব্যাকস্ট্রোক, বাটারফ্লাই ও ফ্রি স্টাইল রিলে ইভেন্টে দাপটের সঙ্গে স্বর্ণ জিতেছেন। আকর্ষণীয় বিষয়টি হচ্ছে বিশ্ব পর্যায়ে অথবা প্যারালিম্পিকে তার প্রতিটি জয়ই রেকর্ড।

টোকিওতে চলমান প্যারালিম্পিকে গেল বুধবার ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইলের ফাইনালে ঝ্যাং জিতে নিয়েছেন স্বর্ণ। যা চীনের ইতিহাসের ৫০০তম স্বর্ণ পদক। ১৯৮৪ সালে নিউইয়র্ক প্যারালিম্পিক থেকে প্রতিবারই অংশ নিয়েছে দেশটি।


স্বর্ণপদক জেতার পর মিডিয়াকে দেওয়া এক বক্তব্যে ঝ্যাং তাও বলেন, ‘ইভেন্ট শুরুর আগে জানতাম এটাই আমার শেষ টোকিওতে শেষ রেস। আমার কোনও অনুশোচনা নেই। আমি মনে করি এটা ছিল জীবনের অন্যতম সেরা রেস।’ 

এই ঘটনার দুই দিন আগেই ৫০ মিনিটের ব্যাকস্ট্রোকের ফাইনালে অংশ নেন চীনের ইউনান প্রদেশে জন্ম নেয়া এই অ্যাথেলেট। হাত নেই রেস শুরুর আগে মুখ দিয়ে একটি শিট ধরে রাখতে দেখা যায় তাকে। তার পরই পা দিয়ে ঠেলে শুরু করেন রেস। ৩১.৪২ সেকেন্ডে রেস জিতে নিয়ে গড়েন বিশ্ব রেকর্ড।


অশ্রুভেজা চোখে ভিডিও কলে দুই বছর বয়সী মেয়ে সন্তানকে বলছিলেন, ‘দেখ আমার একটিও হাত নেই। তবু দ্রুত সাঁতার কাটতে সক্ষম আমি।’

বিবিসি জানাচ্ছে, চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ঝ্যাং তাওকে ‘সত্যিকারের অনুপ্রেরণা’ এবং ‘গর্বের উৎস’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

টোকিওতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন প্রায় ১০ কিলোমিটার সাঁতার কেটে নিজেকে প্রস্তুত করতেন ৩০ বছর বয়সী এই সাঁতারু।


১৩ বছর বয়সে সুইমিংয়ের সঙ্গে নিজেকে জড়ান। তার ছয় বছরের মাথায় নেদারল্যান্ডসে হওয়া ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে দেখা যায় তাকে। ২০১২ সালে লন্ডন প্যারালিম্পিকে পা রাখেন। এতে ১০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোক ইভেন্টে স্বর্ণ জিতে দেশে ফেরেন। চার বছর পর রিও প্যারালিম্পিকেও স্বর্ণ জয় করেছেন। এই পর্যন্ত তার ঝুলিতে নয়টি প্যারালিম্পক পদক রয়েছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password