নিশিরাতের ভোট হতে দেয়া হবে না,টেনেহিঁচড়ে সরকারকে নামানো হবে

নিশিরাতের ভোট হতে দেয়া হবে না,টেনেহিঁচড়ে সরকারকে নামানো হবে

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি বলেছেন, ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই আন্দোলনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে। এবার নিশিরাতের ভোট হতে দেয়া হবে না। টেনেহিঁচড়ে সরকারকে নামানো হবে।’ সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশব্যাপী লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে বন্দর এলাকার বিওসি ঘাটে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন রুমিন ফারহানা। বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, ইভিএমের নামে রঙ্গ করতে দেওয়া হবে না। ভোট হবে ব্যালটে—নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।

আগামী নির্বাচনে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না। শতভাগ নয়, মোটামুটি সুষ্ঠু নির্বাচন হলেই কমপক্ষে ২৫০ আসন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করবে। সরকারকে উদ্দেশ্য করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে এত কথা বলেছেন। এখন ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং কেন? জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে জনজীবন যেভাবে দুর্বিষহ করে তুলেছেন, এতে আপনাদের আর একমুহূর্তও ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। কারণ, উন্নয়নের মহাসড়কের বাংলাদেশের প্রতি কিলোমিটার পার হতে এখন এক ঘণ্টা সময় লাগে।’

বিএনপির কর্মীরা যেকোনো অবস্থায় রাজপথে দাঁড়িয়ে থাকতে প্রস্তুত আছেন বলে মন্তব্য করেন রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, ‘জেলায় জেলায় বিএনপির কর্মীদের ওপর গুন্ডালীগ, ছাত্রলীগ, পুলিশ বাহিনী দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনকে পরিষ্কার জানাচ্ছি, হামলা করে বিএনপিকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’

বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের হাসপাতাল মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশে কথা বলেন রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, ‘দেশে এখন বৈদেশিক মুদ্রা ও বিদ্যুতের সংকট চলছে। এখন আমরা বলি, বিদ্যুৎ এসেছে। বিদ্যুৎ চলে গেছে, বলি না। আমরা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সবাই একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করব। আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমান যেন দেশে ফিরতে পারেন, সে জন্য কাজ করব।’

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘চালের দাম এখন ৬০ টাকা। ১ লিটার তেলের দাম ২০০ টাকা। প্রধানমন্ত্রী দেশের ঘরে ঘরে চাকরি দেবেন বলে ঘরে ঘরে বেকার নিয়ে এসেছেন। দেশের সব মানুষ আজ জাহান্নামে আর তোমরা (আ.লীগ) গুটিকয় মানুষ আছ জান্নাতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোনো অপরাধ ছাড়া পুলিশ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়, থানায় নিয়ে নির্যাতন করে। আমরা সব হারিয়েছি। এখন দাঁতভাঙা জবাব দেব।

সরকারকে টেনেহিঁচড়ে বিদায় করব।’ ক্ষতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘২০১৪ সালে প্রতিপক্ষকে নিয়ে খেলার সাহস দেখাতে পারেননি। ২০১৮-তে লুকিয়ে লুকিয়ে অন্ধকারে খেলেছেন। আসুন প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলুন। আমরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে খেলি। মামলা করে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।’ ইভিএম মেশিনকে চুরির মেশিন উল্লেখ করে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, ‘এ মেশিনে ভোট হতে দেওয়া হবে না।

আমরা ইভিএম বুঝি না। আমরা বুঝি ব্যালট।’ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান সিরাজের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া, বিএনপির কুমিল্লা অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল হক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. জিল্লুর রহমান ও যুবদলের কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক এস এন তরুণ দে প্রমুখ। 

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password