হংকংয়ের সেরা প্রাপ্তির শিকার বাংলাদেশ

হংকংয়ের সেরা প্রাপ্তির শিকার বাংলাদেশ

এমনিতেই ক্রিকেট পাগল জাতি হিসেবে বেশ পরিচিতি রয়েছে আমাদের৷ আমাদের দেশের মানুষের ক্রিকেটের প্রতি অন্যরকম এক আবেগ কাজ করে। অনেক সাফল্য ব্যার্থ্যতায় মোড়ানো আমাদের ৩৪ বছরের ক্রিকেট ইতিহাস। বিডি টাইপের এই আয়োজনে আমরা এমন কিছু ম্যাচের স্মৃতিচারন করবো যে ম্যাচগুলো বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের অনেক আনন্দ উল্লাস করার উপলক্ষ সৃষ্টি করে দিয়েছে আবার কিছু পরাজয় ক্রিকেট অনুরাগীদের জন্য ছিল অনেক কষ্টদায়ক। প্রথমে আমরা কিছু পরাজয় তুলে ধরার চেষ্টা করছি যে পরাজয়গুলো ভক্তদের কাছে অনেক পীড়াদায়ক। সেই পরাজয়গুলো নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ২য় পর্ব আজ। লিখেছেন ফয়সাল আহমেদ শিহাব  

আজ আমরা এমন একটি পরাজয় নিয়ে আলোচনা করবো যে পরাজয়টা নিয়ে খুব বেশি আলোচনা হয়না বাংলাদেশ ক্রিকেটে। বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তদের অনেকেই ভূলেই গেছেন সেই পরাজয়টা কিন্ত পরাজয়টা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অনেক বেদনাদায়ক। কথা বলছি ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে হংকংয়ের সাথে পরাজয়ের কথা। একটি ওয়ানডে স্ট্যাটাসহীন দলের সাথে একটি টেষ্ট খেলুড়ে দেশের পরাজয় মেনে নেয়া আসলেও অনেক কষ্টের।

সেদিন চট্রগ্রামের জহুর আহমেদ স্ট্যাডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিন্ধান্ত নেয় হংকং। ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পরে যায় বাংলাদেশ। স্কোর বোর্ডে ৩ রান জমা করতেই তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমানের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর বিপদ কিছুটা সামাল দেন সাকিব আল হাসান ও আনামুল হক বিজয়।

বিজয় ২৬ এবং সাকিব আল হাসান ৩৪ রান করে আউট হয়ে গেলে মুশফিক ও নাসির দলেরর হাল ধরেন৷ তারা দুজনে অবশ্য উইকেটে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি৷  মুশফিক ২৩ ও নাসির ১৩ রান করেন। এরপরই ধস নামে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে৷ বাংলাদেশের  আর কোন ব্যাটসম্যান দুই অংকের ঘরে পৌছাতে পারে নাই। ফলে মাত্র ১৬.৩ ওভারে মাত্র ১০৮ রানে অলআউট বাংলাদেশ। হংকংয়ের পক্ষে নাদিম আহমেদ  মাত্র ২১ খরচায় ৪ উইকেট লাভ করেন।

বোলিং করতে নেমে শুরুতেই উইকেট নিয়ে  হংকংকে চেপে ধরার চেষ্টা করে বাংলাদেশ কিন্ত হংকং দলের ওপেনার ইরফান আহমেদ কাউন্টার অ্যাটাক শুরু করেন। তিনি মাত্র ২৮ বলে ৩ চার এবং ৩ ছক্কার বিনিময়ে ৩৪ রান করেন। সাকিব আল হাসান তাকে আউট করার পর ধস নামে হংকং শিবিরে। ৪৪ রানে ১ উইকেট থেকে ৫০ রানে ৫ উইকেট হারায় হংকং। বাংলাদেশের দিকে ম্যাচ হেলতে থাকে।

ঠিক তখন মুনির দ্বারের ৩৬ এবং হাসিব আমজাদের ৬ বলে ১২ রানের ইনিংস বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে যায় হংকং। হংকং পায় তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে্র সেরা জয়। সাকিব আল হাসান সে ম্যাচে চমৎকার বোলিং করেছে। ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট লাভ করেন তিনি কিন্ত তাতেও হংকংয়ের কাছে বাংলাদেশের হার ঠেকানো যায়নি।

সেই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ বাছাই পর্ব পেরুতে পারলেও হংকংয়ের সাথে পরাজয় বাংলাদেশের ক্রিকেট বিশ্লেষক থেকে শুরু করে বাংলাদেশের অগনিত ক্রিকেট ভক্তদের মন ভেঙে দিয়েছিল।আসলেই হংকংয়ের মতো নবীন দল যাদের কাছে বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে অংশগ্রহন করাই ছিল সেরা প্রাপ্তি তাদের কাছে আমাদের হেরে যাওয়া ছিল সত্যি হতাশজনক। দেশের মাটিতে হংকংয়ের সাথে পরাজয় ছিল আমাদের দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় ধাক্কাগুলোর একটা। সর্বোপরি বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের হংকংয়ের কাছে হেরে যাওয়া পুরো ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা দুর্ঘটনার একটি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password