সঙ্গীর কনডম ফুটো করার অপরাধে নারীকে শাস্তি

সঙ্গীর কনডম ফুটো করার অপরাধে নারীকে শাস্তি

পুরুষ সঙ্গীকে না জানিয়ে কনডম ফুটোর করার অপরাধে এক নারীকে শাস্তি দেওয়ার ঘটনায় জার্মানীতে তুলকালামকান্ড। গর্ভবতী হওয়ার ইচ্ছায় এক নারী কনডম ফুটো করেছিলেন বলে জার্মানির আদালত ঐ নারীকে শাস্তি দিয়েছে। ২০০৯ সালে কানাডার আদালতও এমন এক মামলায় জ্যারেট হাচিনসন নামক এক পুরুষকে ১৮ মাস কারাদন্ড দেয়েছিল।

রায় ঘোষণার সময় জার্মান বিচারক বলেছেন, ব্যাপক আলোচিত এই মামলাটি জার্মানির আইনের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়। জার্মানির ঐ নারীকে বুধবার ছয় মাসের স্থগিত সাজা দেয়া হয়েছে। একে ‘ঐতিহাসিক’ মামলা বলে আখ্যায়িত করেছেন বিলেফেল্ড শহরের আঞ্চলিক আদালতের বিচারক আস্ট্রিড জালেভস্কি৷ খবর ডয়চে ভেলে। জার্মান সংবাদপত্র বিল্ড-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৯ বছর বয়সি ঐ নারী ৪২ বছর বয়সি এক ব্যক্তির সঙ্গে ‘লাভের জন্য বন্ধুত্ব' সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন।

২০২১ সালের শুরুতে অনলাইনে পরিচয়ের পর তারা প্রায়ই যৌন সম্পর্ক করতেন। এক পর্যায়ে ঐ নারী তার সঙ্গীর প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব ও ভালোবাসা অনুভব করে। যদিও তিনি জানতেন, তার পুরুষ সঙ্গীটি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল কোনো স্থায়ী সম্পর্কে জড়াবেন না তিনি। তাই গর্ভবতী হওয়ার ইচ্ছায় ঐ নারী তার সঙ্গীর কনডম ফুটো করেছিলেন। তবে মা হওয়ার তার সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি। অতি আবেগী হয়ে ঐ নারী তার সঙ্গীকে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানোর মাধ্যমে ঘটনাটি জানিয়ে দেন।

তিনি গর্ভবতী এবং ইচ্ছে করে তিনি কনডম ফুটো করেছিলেন বলেও জানান তিনি। এরপর পুরুষ সঙ্গীটি এই তথ্যগুলোর উপর নির্ভর করে আদালতে নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। না জানিয়ে মা হতে চাওয়াকে জার্মান আদালত অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। তবে আদালত ও কৌঁসুলিরা ঐ নারীকে কী শাস্তি দেয়া হবে, তা নিয়ে শুরুতে নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। মামলার শুরুতে এমন অপরাধ ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে কিনা, তা নিয়েও তদন্ত হয়।

পরে বিচারক ঐ নারীকে যৌন হয়রানির অপরাধে অভিযুক্ত করেন। রায় ঘোষণার সময় বিচারক জালেভস্কি বলেন, অস্বাভাবিক এই মামলাটি জার্মানির আইনের ইতিহাস বইয়ে স্থান পাবে। এটি ‘স্টেলথিং' অপরাধের একটি উদাহরণ- তবে এক্ষেত্রে অপরাধী একজন নারী। যৌনকর্মের সময় সঙ্গীকে না জানিয়ে একজন পুরুষের কনডম খুলে ফেলাকে সাধারণত ‘স্টেলথিং' বলা হয়। এর আগেও কনডম ফুটো করার অপরাধে কানাডাতে এক পুরুষকে সাজা দিয়েছে সে দেশের আদালত।

২০০৯ সালের ঘটনা ছিল সেটি। ক্যানাডার নোভি স্কোটিয়া সুপ্রিম কোর্ট অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি জানিয়ে হাচিনসনকে প্রথমে নির্দোষ ঘোষণা করে। কিন্তু আপিল আদালত সেই রায় খারিজ করে নতুন করে মামলার শুনানির নির্দেশ দেয়। তাতেই ফেসে যায় হাচিনসন।অবশেষে ক্যানাডার সুপ্রিম কোর্টে মামলাটির নিষ্পত্তি হয়েছে। কনডম ফুটো করার তথ্যটি গোপন করে প্রেমিকাকে গর্ভবতী করাকে কানাডার আদালত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত করে। এবং জ্যারেট হাচিনসনকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password