ঢাবি ছাত্রীর দুই হাজার টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায় ধর্ষক

ঢাবি ছাত্রীর দুই হাজার টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায় ধর্ষক

রাজধানীর কুর্মিটোলায় ধর্ষণের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ব্যাগ, মোবাইল ফোন ও দুই হাজার টাকা নিয়ে যায় ধর্ষক। ওই ছাত্রীর বাবার করা মামলার এজাহার থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

মামলার এজাহার মঙ্গলবার মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ঢাকার আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। আগামী ২৮ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।

এজাহারে বলা হয়েছে, রাজধানীর শেওড়া এলাকায় বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে গত রোববার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে রওনা দেন ওই শিক্ষার্থী। রাত সাতটার দিকে বাসটি কুর্মিটোলায় থামে। বাস থেকে নেমে ওই শিক্ষার্থী ফুটপাত দিয়ে শেওড়ার দিকে হাঁটা শুরু করেন। গলফ ক্লাব মাঠসংলগ্ন স্থানে গেলে পেছন থেকে অজ্ঞাতনামা আসামি (বয়স ২৫ থেকে ৩০) তাঁর গলা চেপে ধরেন। এতে ওই ছাত্রী অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। পাশাপাশি মারধরও করা হয় তাঁকে।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ধর্ষণকারীর উচ্চতা পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি। গায়ের রং শ্যামলা। মাথার চুল ছোট। পরনে ছিল জিনসের পুরোনো ফুলপ্যান্ট। গায়ে ছিল কালো রঙের ফুলহাতা জ্যাকেট। ওই শিক্ষার্থীর ব্যাগ, দুই হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেছেন, ওই ছাত্রী যে স্থানে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, সেই স্থানের আশপাশের কিছু ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে দ্রুতই ধর্ষক গ্রেপ্তার হবে।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ধর্ষকের শরীরিক গঠন সম্পর্কে জানার পর বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তারা। পাশপাশি সন্দেহভাজন পথচারীদের শনাক্তে আশপাশের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনাস্থল থেকে সোমবার দুপুরে আলামত সংগ্রহ করে সিআইডি।

ধর্ষকের শারীরিক বিবরণ তদন্তে সহায়ক হয়েছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী মঙ্গলবার বলেন, ওই শারীরিক গঠনের যুবককে খুঁজে বের করতে কাজ চলছে। এরমধ্যে কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে।

তিনি জানান, ওই ছাত্রীর মোবাইলটি পাওয়া যায়নি। তবে এরমধ্যে ফোন করলে রিং হয়েছে। এ নিয়ে কাজ চলছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। তবে দূরবর্তী গলফ গার্ডেন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

এসব সংগ্রহ করার উদ্দেশ্য হচ্ছে, সন্দেহভাজন পথচারীদের শনাক্ত করা। কেউ ওই শিক্ষার্থীকে আগে থেকে অনুসরণ করেছিল কি না বা ঘটনার পরে ধর্ষক চলে যাওয়ার দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা।

কাউকে সন্দেহ হলে তার শারীরিক গঠন মামলায় দেওয়া বিবরণের সঙ্গে মেলানো হবে এবং পরে ওই শিক্ষার্থীকে দেখিয়ে তার কাছ থেকে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

মাহবুব আলম বলেন, ধর্ষক আশপাশের কোনো বস্তিবাসী, ছিনতাইকারী বা মাদকসেবী বলে আমরা ধারণা করছি।

ঘটনাস্থলের এক কিলেমিটারের মধ্যে বসবাসকারী বস্তিবাসীর কেউ এই কাজ করে থাকতে পারে। আমরা এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে কাজ করছি।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password