কয়েকটি অসাধু চক্র ফেসবুকে এনআইডি সমস্যা সমাধান করে দেয়ার ঘোষণা দিচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হলেও জরুরি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা চালু রেখেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

‘NID CORRECTION’ নামে এক ফেসবুক গ্রুপে সর্বশেষ পোস্টে একদম ‘অল্প রেটে’ সমস্যা সমাধানের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন করতে বলা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ইংরেজিতে ‘NID CORRECTION’ লিখে সার্চ দিলে দেখা যায় এ সংক্রান্ত অসংখ্য গ্রুপ রয়েছে। এসব গ্রুপে নিজেদের মতো করে এনআইডি সংক্রান্ত সেবা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে।

যেসব সেবা দেয়ার কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো হলো- ‘স্লিপ দিয়ে কার্ড বের হচ্ছে না? ‘স্লিপ হারিয়ে ফেলছেন? ‘নো ভোটার ফাউন্ড দেখায়?’ ‘স্লিপ আছে, জন্মতারিখ নাই?’ ‘রেজিস্ট্রেশন হয় না?’ ‘দুবার ভোটার হয়েছেন?’ ‘ফরম নম্বর দিয়ে আইডি কার্ড উত্তোলন’, ‘ফেস স্ক্যান করা ছাড়াই পাসওয়ার্ড সেট’, ‘আইডি নম্বর দিয়ে আইডি কার্ড উত্তোলন,’ ‘জন্মনিবন্ধন দিয়ে আইডি কার্ড উত্তোলন,’ ‘নতুন ভোটার হয়েছিলেন কিন্তু এখনো কার্ড পান নাই? ‘হারানো আইডি কার্ড উত্তোলন,’ ‘ভোটার হয়েছেন আইডি কার্ড পাননি?’ ‘সার্ভার কপি (স্বাক্ষরসহ এবং স্বাক্ষর ছাড়া)’।

বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে গ্রুপ পোস্টে আরও বলা হয়েছে- ‘সংশোধন এবং জন্ম নিবন্ধন-এর কাজ করি না।’

‘NID CORRECTION SERVICE (ঘরে বসেই জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি সংশোধন করুন)’ নামে একটি গ্রুপের সর্বশেষ পোস্টে লেখা হয়, ‘ভোটার আইডি কার্ড (NID) হারিয়ে গেলে/নষ্ট হলে এবং স্লিপ নম্বর দিয়ে নিতে চাইলে যোগাযোগ করুন।’

‘Nid Correction & Reissue’ নামে এক গ্রুপে লেখা আছে- টাকা নয়, ‘সেবাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এই গ্রুপটি নিজেদের কাজের বর্ণনায় বলেছে- এনআইডি কার্ড সংশোধন এবং নতুন এনআইডি কার্ড পেতে সাহায্য করা হয়; হারানো/নষ্ট হওয়া কার্ড রিইস্যু করে নতুন কার্ড দেওয়া হয়; আইডি নম্বর/স্লিপ নম্বর/ভোটার নম্বর/জন্ম নিবন্ধন নম্বর/ ভোটার হওয়ার সময় দেওয়া মোবাইল নম্বর/ পিতা, মাতার আইডি নম্বর দিয়ে কার্ড তুলে দেওয়া হয়; হারানো কার্ডের কোনো তথ্য না থাকলে নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ সহ ৮০% তথ্য সঠিক দিলে কার্ডের তথ্য খুঁজে দেওয়া যাবে; এডমিন-মডারেটর বাদে অন্য কাউকে দিয়ে কাজ করাবেন না; কাজের আগে ৫০% পেমেন্ট অগ্রিম দিতে হবে।’

‘BD NID CORRECTION’ নামে এক গ্রুপে বলা হয়েছে, ‘এই গ্রুপের সাথে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কোনো প্রকার সম্পর্ক নাই, তবে যতটুকু পারি আমরা সবাইকে সাহায্য করার চেষ্টা করি। গ্রুপটির সর্বশেষ পোস্টে বলা হয়, ২০০৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সকল ভোটারের কার্ড তুলে দেওয়া হয়।’ প্রয়োজনে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলে গ্রুপটি।

ফেসবুকে এনআইডি সংশোধন করার এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ইসির মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অনেক আগে থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

ইসির দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৯ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫ জন, নারী ভোটার ৫ কোটি ৫১ লাখ ২২ হাজার ২২৩ জন ও ৪৪১ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে।

ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ খুলে এনআইডি সংক্রান্ত সেবা দেয়ার ঘোষণার বিষয়টি নজরে আনলে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। যেহেতু আপনি আমার নজরে এনেছেন, বিষয়টি দেখব।