বারবাকপুরের বাড়িতে বাড়িতে চুইঝাল গাছ, বিক্রি হয় অনেক টাকায়

বারবাকপুরের বাড়িতে বাড়িতে চুইঝাল গাছ, বিক্রি হয় অনেক টাকায়
MostPlay

দেড় যুগ আগে লাগানো শিমুল গাছটি বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার টাকায়। অথচ সাড়ে চার বছর আগে সেই শিমুল গাছের গোঁড়ায় বেড়ে ওঠা চুইঝালের গাছটি বিক্রি হয়েছে ৮ হাজার টাকায়! এর দাম আরো অনেক বেশি। এরপর বাড়িতেও খাওয়া হয়েছে অনেক চুইঝাল। কথাগুলো বলছিলেন আবু কালাম। তিনি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের মৃত আমির আলী দফাদারের ছেলে।
পেশায় চা-দোকানিআবু কালাম জানান, সাড়ে চার বছর আগে পাশের গ্রাম থেকে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব হোসেন একটি চুইঝালের লতা (কাটিং) এনে বাড়ির শিমুল গাছের গোড়ায় পুতে গিয়েছিলেন। তার পরামর্শে গাছের গোড়া সবসময় শুষ্ক রেখে চুলার ছাই দিতাম। কয়েকদিন আগে শিমুল গাছটি বিক্রি করার কারণে চুইঝালের গাছটিও বিক্রি করতে হয়েছে। তবে চুইঝালের বাজার দর জানা না থাকায় ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। শুনেছি আমার (আবু কালাম) কাছ থেকে ৮ হাজার টাকায় কিনে তিনি বিক্রি করেছেন ৩০ হাজার টাকায়।
চুইঝাল মসলা জাতীয় উদ্ভিদ। দেখতে অনেকটা পানগাছের (গেছো পান) মতো। অন্য গাছকে পেঁচিয়ে এরা বাড়তে থাকে। প্রতি গিরাতে গজানো শেকড় অন্য গাছকে আঁকড়ে ধরে রাখে। তবে চুইঝালের গোড়ার অংশ অনেক মোটা হয়। এটা শুষ্ক জায়গায় ভালো জন্মে। চুইঝাল (কাঠ অংশ) সকল প্রকার মাংস ও শাক রান্নায় মসলার মতো ব্যবহার করা হয়। এটা দিয়ে রান্না করলে বাড়তি মরিচ না দিলেও হয়। চুইঝালে রান্নার মাংস ও শাক সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণের কারণে খুলনা-যশোরাঞ্চলে এর কদর খুব বেশি। তাই এই অঞ্চলের মানুষ বাড়িতে চুইঝালের চাষে অনেকটা ঝুঁকে পড়েছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিকরগাছার বারবাকপুর গ্রামের সববাড়িতে দুচারটা করে এর গাছ আছে। গ্রামের ফয়সাল হোসেনের স্ত্রী রেখা খাতুনের বাড়িতে ৩টা গাছ আছে। ইতোমধ্যে দেড় হাজার টাকার চুইঝাল বিক্রি করেছেন। আছে এখনো গাছ ভর্তি। সারা বছর খেয়েছেন ইচ্ছেমতো। বছর তিনেক আগে লাগিয়েছিলেন।
আব্দুল হালিমের স্ত্রী নাজমা খাতুন ও সফিকুল ইসলামের স্ত্রী কুলসুম বেগম জানান, বাড়িতে যতগুলো গাছ আছে সবগুলোর গাছের সাথে চুইঝাল আছে।
আবু কালাম বলেন, এবার বাড়ির ৭টি গাছের গোড়ায় চুইঝালের লতা পুতেছি।
ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, আড়াই বছর আগে উপজেলা পরিষদের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বারবাকপুর গ্রামে ৪ শ পরিবারের মধ্যে চুইঝালের চারা বিতরণ করা হয়। তা থেকে এখন সম্পূর্ণ গ্রামটা চুইঝালের গ্রামে পরিণত হয়েছে। তার দাবি এই গ্রামের অনেক পরিবার আগামিতে চুইঝাল বিকি করে স্বচ্ছলতার সাক্ষর রাখবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password