একের পর এক আলোচনা- সমালোচনায় উঠে আসছে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যাকাণ্ডের। এবার গায়ত্রী অমর সিং নামে এক এনজিও কর্মীর সঙ্গে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের প্রেম ছিল বলে অভিযোগ তুলেছেন মাহমুদা আক্তার মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। বুধবার চট্টগ্রামের পাচঁলাইশ থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে এ অভিযোগ করেন বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন।

বাবুল আক্তার ২০১৪-১৫ সালে মিশনে সুদানে যাওয়ার সময় তার একটি  মোবাইল ফোন বাসায় রেখে যান। ওই মোবাইলে ফোনে গায়ত্রী ২৯ বার বিভিন্ন ম্যাসেজ দেন। ম্যাসেজগুলো দেখে মিতু প্রথম বাবুল-গায়ত্রীর প্রেম সম্পর্কে জানতে পারেন। মো. মোশাররফ হোসেন এসব বিষয় তুলে ধরেছেন মামলার এজাহারে। মিতু তার ডায়েরিতে বাউল গায়ত্রীর প্রেমের  বিষয়ে লিখে রেখে গেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বাবুল আক্তার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কক্সবাজারে থাকার সময় ইউনাইটেড ন্যাশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস (ইউএনএইচসিআর) কর্মকর্তা গায়ত্রী অমর সিংয়ের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন বলে এজাহারে বলা হয়।

পাঁচ বছর আগে স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারই মামলা করেছিলেন। সেই মামলা তদন্তদকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যত বাতিল করে দেওয়ার পর বুধবার বাবুলকে আসামি করে মামলা করেন মিতুর বাবা মো. মোশাররফ হোসেন।

মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারের জড়িত থাকার ‘তথ্য প্রমাণ’ পাওয়ার কথা জানিয়ে পিবিআই বুধবার তার মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পরপরই মিতুর বাবা নতুন মামলা করেন। তাতে প্রধান আসামি করেন জামাতাকে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, 'তালেবান' এবং 'বেস্ট কিপ্ট সিক্রেট' নামে দুটি বই বাবুলকে উপহার দেন গায়ত্রী। বই দুটিতে গায়ত্রীর সঙ্গে বাবুলের সাক্ষাতের তারিখ ও স্থান লেখা রয়েছে। তারা কোথায় কোথায় দেখা করেছেন, ঘুরতে গেছেন সেসব বিষয় উল্লেখ আছে। প্রথম সাক্ষাতের তারিখও লেখা আছে। ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাবুল ও গায়ত্রীর প্রথম দেখা হয় বলে বইয়ে লেখা রয়েছে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর বাবুল-গায়ত্রী কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে একসঙ্গে সময় কাটান। এছাড়া ওই বছরের ১২ অক্টোবর তারা একসঙ্গে রামু মন্দিরে ঘুরতে যান। 'বেস্ট কিপ্ট সিক্রেট' বইয়ের দ্বিতীয় পাতায় লেখা রয়েছে, 'উইথ মাই সিনসিয়ার লাভ,- ইউরস গায়ত্রী'।

মো. মোশাররফ হোসেন এজাহারে আরও অভিযোগ করেন, তার মেয়ে মিতু এই ‌‘অনৈতিক সম্পর্কের’ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন বাবুল। নির্যাতনের বিষয়টি মিতু জানিয়েছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন তার বাবা।