চট্টগ্রামের প্রবাসী ওমান থেকে একসঙ্গে দেশে ফিরলেন লাশ হয়ে

চট্টগ্রামের  প্রবাসী ওমান থেকে একসঙ্গে দেশে ফিরলেন  লাশ হয়ে
MostPlay

সালাউদ্দিন, জাহিদ ও আক্তার। তিনজনই ছিলেন ওমান প্রবাসী। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়। কথা ছিল লকডাউন শেষে একসঙ্গে দেশে ফিরবেন তিনজন। কিন্তু ফিরে এলেন লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই। তবে জীবিত নয়, ফিরলেন নিথর দেহে।১৮ এপ্রিল ওমানে সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় তাদের প্রাণ। সব প্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার সকালে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে তাদের মরদেহ। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহগুলো বাড়ি নিয়ে যান স্বজনরা। এরপর আলাদা আলাদা জানাজা শেষে সম্পন্ন হয় তাদের দাফন।

জাহিদ পোমরা ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার আবদুল মুবিনের ছেলে, সালাউদ্দিন সরফভাটা ইউনিয়নের পশ্চিম সরফভাটা সূচিয়া পাড়া এলাকার ফয়েজ আহাম্মদের ছেলে ও আক্তার বেতাগী ইউনিয়নের গুনগুনিয়া বেতাগী বালুরচর এলাকার ইসহাক মিয়ার ছেলে। তারা ওমানের রাজধানী মাস্কাটে মডার্ন রোজ ট্রেডিং এন্টারপ্রাইজ এলএলসি নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, লকডাউন শেষে একসঙ্গে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাদের। কিন্তু এর আগেই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তাদের প্রাণ কেড়ে নেবে জানা ছিল না কারো।

সালাউদ্দিনের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, তিন বছর আগে ওমান গিয়েছিল সালাউদ্দিন। লকডাউন শেষে দেশে ফেরার কথা ছিল তার। সে ফিরল ঠিকই। কিন্তু নিথর দেহে। তার স্ত্রী ও দুটি সন্তান রয়েছে। এভাবে মৃত্যু হবে তা আমরা ভাবিনি।জাহিদের ভাগ্নে ইফতেখার আহাম্মদ জিসান বলেন, মামা ছয় বছর ধরে ওমানে রয়েছেন। বছরখানেক আগে একবার দেশে এসে ঘুরে গিয়েছিলেন। এবারো লকডাউন শেষে আসার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনায় সব এলোমেলো হয়ে গেল। মামার পরিবারে মা-বাবা, স্ত্রী এবং ১৭ ও ৯ বছর বয়সী দুটি ছেলে রয়েছে।

আক্তারের ছোট ভাই মো. ইব্রাহিম বলেন, প্রায় দেড় যুগ ধরে ওমানে ছিলেন আমার ভাই। সেখানে থেকে তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। শুনেছি লকডাউন শেষে দেশে আসার কথা ছিল তার।এদিকে, শুক্রবার বিকেলে মরদেহগুলো বাড়ি নেয়ার পর তাদের নিজ নিজ এলাকায় এক করুণ দৃশ্যের অবতারণা হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।১৮ এপ্রিল ওমানের স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে সালালাহ-মাস্কাট সড়কের আল তামরিত এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত হন তারা। রাজধানী থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরে সালালাহ এলাকায় কাজ শেষে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password