রাজধানীতে সুঠাম দেহের তরুণদের নিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা

রাজধানীতে সুঠাম দেহের তরুণদের নিয়ে চলছে রমরমা ব্যবসা
MostPlay

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শাহিন হোসেন (ছদ্মনাম)। কিন্তু যা বেতন পান, তা দিয়ে সংসার ঠিক মতো চলে না। তাই অনেকদিন ধরেই আরেকটি পার্টটাইম চাকরি খুঁজছিলেন তিনি।

অবশেষে এক সিন্ডিকেটের হাত ধরে বাড়তি রোজগারের পথও পেয়ে যান তিনি। তবে সেটা কোনো চাকরি নয়, বলা যায় স্বা’মী বাণিজ্য। রাজধানীতে এমন আরো অসংখ্য তরুণ-পুরুষ রয়েছেন, যারা জড়িয়ে পড়েছেন স্বামী বাণিজ্যে। কেউ বা ক্ষুদ্র ঋণ পেতে, অভাবের তাড়নায় কিংবা বাধ্য হয়ে; আবার অনেকে নিজেদের যৌন ক্ষুধা মেটাতে ভাড়ায় স্বামী বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ছেন।

ভাড়ায় স্বামী বাণিজ্য রাজধানীতে বেশ রমরমা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে চার ধরনের প্রতারণার জন্য এসব স্বামী পরিচয়ে পুরুষ ভাড়া পাওয়ার নানা তথ্য উঠে এসেছে ডেইলি বাংলাদেশের অনুসন্ধানে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিনে ৫শ কিংবা মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় ভাড়ায় স্বামী পাওয়ার তথ্য মিলেছে।

আবার একই পুরুষ ভাড়ায় খাটেন একাধিক নারীর স্বামী পরিচয়ে। অনেকে এভাবেই নিজেদের সংসার চালাচ্ছেন। তবে তাদের পরিচয় গোপনই থাকছে। মিরপুর, উত্তরা, রামপুরা, বনশ্রী, গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, নতুন বাজার, বাড্ডা কুড়িল বিশ্বরোড, খিলক্ষেত, খিলগাঁও ও বাসাবো—এসব এলাকায় স্বা’মী বাণিজ্য বেশ রমরমা। বেশ সুঠাম দেহের অধিকারী ৩৩ বছরের যুবক রাশেদুর রহমান (ছদ্মনাম)।

মাস্টার্স পাস করেও মেলেনি চাকরি। তাই চাকরির খোঁজে টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় এসেছেন কয়েকমাস আগে। কিন্তু ভাগ্যে জোটেনি কাঙ্ক্ষিত চাকরি। হঠাৎ একদিন ফেসবুকে চোখ পড়ে একটি চমকপদ বিজ্ঞাপন। সম্পূর্ণ পরিচয় গোপন রেখে সুন্দরী নারীদের ভাড়াটে স্বামী খুঁজছেন তারা।রাশেদুর রহমান জানায়,

ওই পেজে যুক্ত হতে হলে প্রথমে এক হাজার টাকা দিয়ে বায়োডাটা জমা দিতে হয়। এরপর তারা অফিসে ডেকে আনে এবং নিয়মকানুন জানিয়ে দেয়।তিনি আরো বলেন, বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে বাধ্য হয়েই ভাড়াটে স্বামী হয়ে যাই। শর্ত থাকে এসব নারীদের নাম, পরিচয়, মোবাইল নম্বর দেয়া যাবে না কাউকে।

এখন বেশ ভালো আছি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্ষুদ্রঋণ পেতে অনেক সময় বাধ্য হয়েই স্বামী নিগৃহীতারা ভাড়ায় খোঁজেন স্বামী। সে ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে পরিচিত এবং ভালো সম্পর্ক আছে এমন কাউকে স্বামী হিসেবে ভাড়া করেন তারা। এনজিওসহ বেশ কিছু মাল্টিপারপাস কোম্পানি থেকে ক্ষুদ্র ঋণ পেতে শর্ত হিসেবে স্বামীর পরিচয় ও তার ছবি দিতে হয়।

যাদের স্বা’মী নেই তাদের জন্য প্রয়োজন হয় ভাড়ায় স্বামী। স্বামী পরিত্যক্তা আলেয়া বেগম (৩০) থাকেন রাজধানীর মরিপুররে রূপনগর এলাকার একটি বস্ততিতে। ক্ষুদ্র ঋণ পেতে প্রয়োজন স্বামী। তিনি বলেন, ঘরে ১০ বছরের একটি ছেলে ও ৮ বছরের একটি মেয়ে। এদের রেখেই স্বামী আর একটি বিয়ে করে পালিয়ে গেছেন। কোথায় গেছেন সেটাও জানা নেই আলেয়ার।

মানুষের বাসায় কাজ করে কোনো মত সংসার চালাতেন। করোনায় সেই কাজটিও হারিয়েছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, রাস্তার পাশে ফুটপাতে শীতের পিঠা বিক্রি করে সন্তানদের মুখে দুমুঠো ভাত দিতে ক্ষুদ্র ঋণ প্রয়োজন। ঋণ পেতে লাগবে স্বামী। বাধ্য হয়ে পরিচিত একজনকে টাকার বিনিময়ে স্বামী ভাড়া করেন তিনি।

ডিএমপিতে কর্মরত এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এসব ব্যবসা ও বিভিন্ন অপরাধ আগের তুলনায় অনেক কমেছে। নেই বললেই চলে। তার কারণ হলো এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। যদি কেউ গোপনে এসব অপকর্ম চালায় আপনারা আমাদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। 

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

মন্তব্যসমূহ (০)


Lost Password